দেশে সবসময় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে সব ধর্ম–বর্ণের সবার শান্তিতে সুন্দরভাবে বসবাসের প্রত্যাশার কথা জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ–জামান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন এবং আপনারা ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করবেন। গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। সবাইকে সৌহার্দ্য–সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই দেশে শত শত বছর ধরে হিন্দু–মুসলমান, বৌদ্ধ–খ্রিস্টান, পাহাড়ি–বাঙালি–উপজাতি সবাই মিলে আমরা অত্যন্ত শান্তিতে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে যাচ্ছি। আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার হবে সেই সম্প্রীতি, সেই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমরা সবসময় বজায় রাখব। এদেশ সবার, এদেশে আমরা সবাই শান্তিতে সুন্দরভাবে বসবাস করব। খবর বিডিনিউজের।
সেনাপ্রধান বলেন, এখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। কোনো ধর্ম–জাতি, বর্ণ–গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এই দেশ সবার। সবাই আমরা এই দেশের নাগরিক। আমাদের সবার সমান অধিকার এদেশের ওপরে আছে এবং সেভাবেই আমাদের সামনের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে বাদ্য বাজছে। এই আনন্দে আমাদেরকে সাথে নেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন এবং আপনারা ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করবেন, আনন্দের সাথে উদযাপন করবেন, আমরা একসঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করব। আমি আশা করি ইনশাল্লাহ এই উৎসব সবসময় জারি থাকবে, মিছিল সবসময় জারি থাকবে। আমাদের পক্ষ থেকে যত ধরনের সহযোগিতা আপনারা চান ইনশাল্লাহ সেই সমস্ত সাহায্য–সহযোগিতা আপনাদেরকে দেবে। তিনি বলেন, জন্মাষ্টমীর এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। এই আদর্শের ভিত্তিতেই আমরা একসঙ্গে সুন্দরভাবে বসবাস করব।
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বলেন, শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা শুধু অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসই জোগায় না, ন্যায়ের পথেও চলতে শেখায়। এই বাংলাদেশ আমাদের সবার। স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব। সবাই মিলে কাজ করলে বিশ্বের মানচিত্রে এই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, আসুন, পারস্পরিক সহনশীলতার মাধ্যমে দেশকে আরো শক্তিশালী করি। শ্রীকৃষ্ণ যেন সমাজে ন্যায় ও আলোর সত্য প্রজ্বলিত করেন।
পরে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে তিন বাহিনীর প্রধান জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন ঘোষণা করেন। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পালের সঞ্চালনায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকেশ্বরী পরিষদের পর্যদের পরিচালনা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর উপস্থিত ছিলেন।