স্বাধীন বাংলায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক চট্টল বান্ধব আজাদীতে গত ১৫ অক্টোবর অবশেষে নিজের ঘরে উঠলেন বৃদ্ধা মা এবং ২১ নভেম্বর একটি ঘর একটি স্বপ্ন শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ দুটির প্রতি আমার মত অনেকের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। প্রথম সংবাদটিতে জানা যায় একপুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জননী আকলিমা বেগম নামে এক বয়োবৃদ্ধার করুণ কাহিনী যাকে তাঁর একমাত্র ছেলে এবং পুত্রবধূ পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটে হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শ গ্রামের দক্ষিণ পাহাড়ের মাছুম ফকিরের বাড়িতে। ঘর থেকে বের করে দিয়েও ক্ষান্ত হয়নি ছেলে, তাঁর ব্যবহারের জিনিনসপত্র এবং কাপড় চোপড় ও ঘরের বাইরে ফেলে দেয়। এমনই দুঃসহ অবস্থায় ঐ বৃদ্ধা মা যান হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব রুহুল আমীনের কাছে। ইউএনও মহোদয় তাঁর নিদারুন কষ্টের কথা শুনে তৎক্ষণাৎ তাঁর বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে কাউন্সিলিং করে থাকা এবং ভরণপোষণের ব্যবস্থা করেন এবং ছেলেকে এ বলে সাবধান করে দেন যে, ভবিষ্যতে বৃদ্ধামায়ের প্রতি এই ধরনের অমানবিক আচরণ করলে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
দ্বিতীয় সংবাদে জানা যায় হাটহাজারী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণদাশের বিধবা স্ত্রী দিপু রাণী দাশ তার মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ভাইদের জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঘেরা একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করলেও শেষের দিকে সেই ঘরটিও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় দিপুরাণী তার অভাব অনটন এবং নিদারুন কষ্টের আকুতি নিয়ে ছুটে যান হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তিনি সরেজমিনে গিয়ে তার দুরবস্থা অবলোকন করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি ঘর তৈরী করে দেন। যে ঘরটির নাম এখন শান্ত নীড়। ‘শান্ত নীড়ে’ এখন শান্তভাবেই বসবাস করছে দিপুরাণী দাশ। আমরা হাটহাজারী উপজেলা কর্মকর্তা জনাব রুহুল আমীন মহোদয়কে তাঁর এই ধরনের মহতী কাজের জন্য সাধুবাদ জানাই এবং উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করে আশা করব তিনি তাঁর এই ধরনের মানবিক কাজগুলো অব্যাহত রাখবেন।
শেখ মোজাফফর আহমদ, ফোররখ সেন্টার, নজুমিয়া হাট, চট্টগ্রাম।