এই শহর আরো সুন্দর দেখতে চাই

রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচে যাবে আগামী বছর

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, রিহ্যাবের সদস্য যারা আছেন, আপানারা অবশ্য আইন ও নিয়ম মেনে বাড়িঘর নির্মাণ করবেন। এই দেশ, এই শহর আমাদের সকলের। তিনি বলেন, যত দিন যাবে এই শহর আমরা আরো সুন্দর দেখতে চাই। খোলামেলা রাখাটাই এখানে বড় বিষয়। এখন আমি অপরিকল্পিতভাবে একটি বিল্ডিং বানিয়ে ফেললাম, পরবর্তীতে আমার গা ঘেঁষে আরেকজন বানিয়ে ফেললো, দুজনের জন্য কিন্তু এটি সমস্যা। তখন আপনারা বাড়ি ভাড়াও কম পাবেন। আর যেটা খোলামেলা সেটার ভাড়াও কিন্তু বেশি। তাই যত্রতত্র মার্কেট করা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকবেন। আমরা বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটা ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি, পরিকল্পিত শিল্প এলাকা ছাড়া আর কোথাও বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংযোগ দিব না। সুতরাং আপনারা যারা ভবিষ্যতে শিল্প করতে চান, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস এবং বিদ্যুতের জন্য অবশ্যই আপনাদের পরিকল্পিত শিল্প এলাকায় যেতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরীর পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউ এর মোহনা হলে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত চারদিনব্যাপী ‘রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। নসরুল হামিদ বলেন, চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে যত ইলেকট্রিক লাইন আছে আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড করে ফেলব। এই প্রকল্পের শুরু হবে আগামী বছর থেকে। ইতোমধ্যে নকশা প্রায় শেষ পর্যায়ে। কনসালটেন্ট কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই বছর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন বড় বড় শহরগুলোর যত বৈদ্যুতিক লাইন আছে সব মাটির নিচ দিয়ে যেতে হবে। আপনারা এখন মাথার ওপর যত তার দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো আর থাকবে না। তবে এই কাজের জন্য আমাদের সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা দরকার। সহায়তা দরকার চট্টগ্রামবাসীরও। কারণ কাজ করতে কিছু তো ভোগান্তি হবে। আপনারা আশা করি বিদ্যুৎ বিভাগকে সহযোগিতা করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, রিহ্যাবের চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা আমাকে বলেছেন চট্টগ্রামে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা রিহ্যাবের সদস্য নয়। তাদের লাইসেন্স যেন আমরা রিহ্যাবের সদস্য পদ ছাড়া নবায়ন না করি। তাহলে আবাসন খাতে হয়রানি ও দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে। তবে এক্ষেত্রে কে রিহ্যাবের সদস্য, কে সদস্য না, এটি বের করা আমার জন্য একটি দূরূহ বিষয়। এক্ষেত্রে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে যদি পত্রিকায় সদস্যদের তালিকা দিযে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়, তবে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন কাজল বলেন, নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনে রিহ্যাব সদস্যভুক্ত ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং দেশের আবাসন চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে। বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম। অথচ সরকারি এবং রিহ্যাব সদস্যদের মাধ্যমে বছরে মাত্র ১০ শতাংশ আবাসন সরবরাহ করছে যা চাহিদা অনুযায়ী নিতান্তই কম। এজন্য তিনি এই সেক্টরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করেন।
স্বাগত বক্তব্যে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘সকলের জন্য বাসস্থান’ নিশ্চিতকল্পে রিহ্যাব সদস্যগণ অঙ্গীকারবদ্ধ। এজন্য চাই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে হলে সকল ডেভেলপারকে অবশ্যই রিহ্যাবের সদস্যপদ গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএসহ রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত সকল দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করছি। রিয়েল এস্টেট কোম্পানি হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার আগে প্রতিষ্ঠান রিহ্যাবের সদস্য কিনা তা যাচাই করার জন্য মেয়রের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার ২০২১ এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ শিশুদের ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রী এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রিহ্যাবের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) ও ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সোহেল রানা। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম দুলাল, ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন শরীফ আলী খান, পরিচালক ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির কো-চেয়ারম্যান (১) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ দিদারুল হক চৌধুরী, পরিচালক ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির কো-চেয়ারম্যান (২) মাহবুব সোবহান জালাল তানভীর।
উল্লেখ্য, প্লট, ফ্ল্যাট, বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ রিহ্যাব ফেয়ারে রয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭১টি স্টল। ইতোপূর্বে চট্টগ্রামে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে ১৩টি সফল আবাসন মেলা করা হয়েছে। এবার ১৪তম রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডোপ টেস্টে সিএমপিতে চাকরি হারালেন ৬ জন
পরবর্তী নিবন্ধ৮ জনকে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা, ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত