দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরো ৬১ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এরা সবাই দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বহিষ্কৃতদের মধ্যে ২৬ জন চেয়ারম্যান পদে, ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং বাকি ১৬ জন সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির যে সকল নেতৃবৃন্দ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদেরকে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের দেড়শ উপজেলায় ভোটে অংশ নেওয়ায় এর আগে ৭৯ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। অর্থাৎ দুই দফায় বিএনপি বহিষ্কার করল মোট ১৪০ জনকে। প্রথম দফায় বহিষ্কার করার পর একজন নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বিএনপি তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিয়েছে। বাকিরা কেউ নির্বাচন থেকে সরতে রাজি নন। বরং ভোট বর্জন করায় দলকেই দুষছেন তারা।
জাতীয় নির্বাচনের মত উপজেলা নির্বাচনেও যাচ্ছে না বিএনপি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়– এই সিদ্ধান্তে অটল তারা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে অন্তত দেড় বছর কোনো স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি দলটি।
বিএনপি ভোটে না এলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা বলছেন, তাদের এলাকায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অংশ নিচ্ছেন। তাতে আওয়ামী লীগপন্থিদের ভোট ভাগের সুযোগ নিতে চাইছেন তারা। তবে বিএনপি ছাড় দিচ্ছে না। গত ২৬ এপ্রিল ৭৬ জনকে, পরদিন তিন জনকে এবং সবশেষ ৩০ এপ্রিল বহিষ্কার করা হয় চারজনকে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মেহেরপুর সদর উপজেলায় সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী রোমান আহমেদ। বিএনপি তখন তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে।
রুহুল কবির রিজভীর বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন বিএনপি বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্ত যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না বলে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, আমরা মনে করি উপজেলা নির্বাচনও অবাধ সুষ্ঠু হবে না। যারা ভোটে এসেছের তাদের সঙ্গে সরকারের যোগসাজশ তৈরি হয়েছে বলে এর আগে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বিএনপির পক্ষ থেকে স্থানীয় নির্বাচনের ভোট বর্জনে ভোটারদের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে।