আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূল্লাহ (সাঃ)। আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা সায়্যিদিনা মওলানা মোহাম্মদ ওয়ালা আলিহী ওয়াসহাবিহী ওয়াবিরিকা ওয়াসাল্লিম মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে যেসব নিয়ামত দান করেছেন তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছে আল্লাহপাক আমাদেরকে তাঁর হাবিব রাহমাতাল্লিল আলামিন রাসূলেপাক (সাঃ) এর উম্মত হিসাবে দুনিয়াতে পাঠিয়ে আমাদের সম্মানিত করেছেন।
আমাদের নবীজির পূর্বে আরো অনেক নবী আল্লাহ পাক পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সকল নবীগণ নিজেকে আমাদের প্রিয় নবী রসুলে পাক (সাঃ) এর উম্মত ভাবতেন কিন্তু তাঁরা হতে পারেননি। আল্লাহ আমাদেরকেই তাঁর হাবিবের উম্মত হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমরা তাঁর দেয়া নিয়ামতের অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি। রহমতের কাণ্ডারী নবী রসূলে পাক মোহাম্মদ (সাঃ) এর শুভ আগমনের দিন ১২ রবিউল আউয়াল মাস আমাদের মাঝে শুভাগমন। আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা হিসাবে এ পবিত্র মাসে আমাদের কী করণীয় তা প্রত্যেকের জানা আবশ্যক।
অনেকে জ্ঞানের সংকীর্ণতার কারণে বলে থাকে রাসূলতো মৃত আর মৃত ব্যাক্তি কোনো কিছু করতে পারেনা, মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বইয়ে আনতে পারেন। তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ মিথ্যা, নবীজি মৃত নন। তিনি আমাদের মাঝে বেছে আছেন। কিয়ামত পর্যন্ত আমাদের জন্য রহমতাল্লিল আলামিন হিসেবে বেঁচে আছেন। দুনিয়ার জগৎ, কবরের জগৎ এবং বিচার দিবস সহ সর্ব জগতে তিনি আমাদের জন্য রহমতাল্লিল আলামীন।
প্রিয় নবী রাসূল পাক (সাঃ) বলেন, আমার উম্মতেরা কেউ যখন আমাকে সালাম দেই আমি তাকে সাথে সাথে সালামের জবাব দিই। এবং আমি তাকে আরো বেশি সালাম দিই।
স্বয়ং আল্লাহ সুবাহানাহ তাআলা সূরা আযহাবের ছাপ্পান্ন নম্বর আয়াতে বলেন ‘নিশ্চয় আল্লাহ এবং তাঁর ফেরশতারা নবীর উপর দরুদ পাঠ করেন, হে ঈমানদারগণ তোমরাও নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করো এবং সালাম পেশ করো ’
তাই এমন কোনো সময় নেই যে প্রতিটা সেকেন্ডে প্রতিটা মিনিটে আল্লাহর পক্ষ থেকে, তাঁর ফেরশতার পক্ষ থেকে রাসূলে পাক (সাঃ)এর সালাম পেশ করা হয় না।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে আল্লাহ পাক তাঁর হাবিব আমাদের প্রিয় নবী রাসূলে পাক (সাঃ) সর্বোচ্চ মর্যাদায় এস্থান দিয়ে সূরা হুজরাতের সাত নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন ‘তোমরা জেনে রাখ তোমাদের মাঝে একজন আল্লাহর রাসূল আছেন’। রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এ মর্যদা সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন যে আমাদের রাসূল আমাদের মাঝে এখনো আছেন কেয়ামত পর্যন্ত থাকবেন এবং আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বড় নিয়ামত। তাই ঈদে মিলাদুন্নবীর এ পবিত্র মাসে রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রতি বেশি বেশি সালাম এবং দরুদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে তাঁর হাবিব রহমতাল্লিল আলামিন রসূল পাক (সাঃ) এর প্রতি সম্মান, ভালোবাসা প্রকাশ করতে হবে।
রাসূলেপাক (সাঃ)কে ভালোবাসা ঈমানের একটি বড় অংশ। রাসূলেপাক (সাঃ) বলেন ‘তোমরা ততক্ষণ ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না সে আমাকে তার পিতা মাতা, সন্তান সন্ততি এবং মানবজাতির চেয়ে আমাকে বেশি ভালোবাসবে’।
রসূলে পাক (সাঃ) এর প্রতি ভালোবাসার আরেকটি মাধ্যম হচ্ছে প্রিয় নবীজির সম্পর্কে জানা, নবীজির সুন্নাতের চর্চা করা এবং আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মাঝে প্রচার করা।
আল্লাহর হাবিবের প্রতি ভালোবাসা বান্দা আল্লাহকে ভালোবাসার পূর্ব শর্ত. অর্থাৎ আমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাই আমাদের সর্বপ্রথম রাসূলে পাক (সাঃ)কে অনুসরণ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক পবিত্র কোরানে সূরা ইমরানের একত্রিশ নম্বর আয়াতে বলেন ‘হে রাসূল আপনি বলুন তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ করো যাতে আল্লাহর তোমাদের ভালোবাসেন এবং গুনাহ ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু ’।
সূরা নিসার চৌষট্টি নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলেন ‘যেসব লোক নিজের উপর জুলুম করে আপনার কাছে এসে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আর যদি আপনি যদি ক্ষমা করে দেন আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিবেন’। তাই এ পবিত্র বরকতময় মাসে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে বেশি বেশি করে রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রতি, নবীজির পরিবারের প্রতি সালাম এবং দরুদ শরীফ পাঠ করা, নবীজির প্রতি সুপারিশ পেশ করা যাতে আল্লাহ আমাদের সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে দেন এবং প্রিয় নবীর সুন্নত সম্পর্কে জানা, তার অনুসরণের চর্চা করা শিখা. আর তা মানুষের মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়া।
এ কাজ গুলো আমল করার জন্য যে জ্ঞান দরকার আল্লাহ পাঁক তা অর্জন করার তৌফিক দান করুন আমিন।