ভ্যাট আদায়ে গতিশীলতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। সারা দেশে প্রথম বছরে ১০ হাজার ইএফডি মেশিন স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও তা থেকে অনেক দূরে রয়েছে এনবিআর। এখন পর্যন্ত দেশে এক হাজার ৩০০ প্রতিষ্ঠানে ইএফডি স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম ভ্যাট কাস্টমসের অধীনে স্থাপিত হয়েছে দুই দফায় ৫২০টি ইএফডি। আরো ৫০০টি মেশিনের চাহিদাপত্র দিয়ে এখনো কোনো ধরণের সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ভ্যাট কাস্টমসের কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট প্রয়োজনের ৫ শতাংশ ইএফডিও স্থাপন করা যায়নি। ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত ভ্যাট আদায় হচ্ছে না। জানা গেছে, গত বছরের ২৫ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ইএফডি বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যখনই ভ্যাট দিই, আমাদের সন্দেহ করা হয়। বলা হয়, আমরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছি। এই মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা হয়ে যাবে, এতে সন্দেহ দূর হবে। তবে সবাইকে ইএফডি মেশিনের আওতায় আনতে হবে। একটি শপিং সেন্টারের অর্ধেক দোকান যদি মেশিনের আওতায় থাকে তবে ক্রেতারা স্বাভাবিকভাবে যে দোকানে ইএফডি মেশিন নাই সেখানেই যাবেন। এতে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
ভ্যাট কর্মকর্তারা জানান, ইএফডি মেশিন এনবিআরের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকার ফলে ক্রেতা মূল্য পরিশোধের সময় সাথে সাথে আরোপিত ভ্যাট আলাদা হয়ে যাবে। এছাড়া কেনাকাটার সময় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আদায়ের ফলে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।
জানতে চট্টগ্রাম কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপ-কমিশনার মো. শাহীনুর কবির পাভেল দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৫২০ প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানো হয়েছে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে ইএফডি মেশিন স্থাপন একটু ধীরগতিতে হয়েছে। তবে আমরা ইতোমধ্যেই জরিপ চালিয়ে আরো ৫০০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। সেই লক্ষ্যে এনবিআরে মেশিনের চাহিদাপত্র দিয়েছি। মেশিন এলে স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ইএফডি মেশিন বাধ্যতামূলক এমন ২৫ ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ফাস্ট ফুডের দোকান, ডেকোরেটার্স ও ক্যাটারার্স, মোটরগাড়ির গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ ও ডকইয়ার্ড, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ছাপাখানা ও বাঁধাই সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধূলাবিষয়ক ক্লাব, তৈরি পোশাকের দোকান, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালি সামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, শপিং সেন্টার ও শপিং মলের সব সেবা প্রদানকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর ও সুপারশপ, বড় ও মাঝারি ব্যবসা (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান, যান্ত্রিক লন্ড্রি, সিনেমা হল এবং সিকিউরিটি সেবা, কমিউনিটি সেন্টার, মিষ্টান্ন ভান্ডার, স্বর্ণকার ও রৌপ্যকার এবং সোনা-রুপার দোকানদার এবং স্বর্ণ পাকাকারী, আসবাব বিক্রয়কেন্দ্র, কুরিয়ার ও এঙপ্রেস মেইল সার্ভিস, বিউটি পার্লার, হেলথ ক্লাব ও ফিটনেস সেন্টার এবং কোচিং সেন্টার।