মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি (এমএলএম) ‘ইউনিপে টু ইউর’ জব্দ থাকা অর্থের বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে বিনিয়োগকারীসহ যাদের (ডিক্রি পাওয়া) পাওনা দাবি আছে, তারা পাওনা দাবি নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারবেন। এ বিষয়ে দুদকের করা আপিল নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। চলতি বছরের ৫ মার্চ দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ১৫ মে প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। ১২ পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পাঁচজন বিনিয়োগকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক ও আইনজীবী রাফসান আল আলভী। খবর বাংলানিউজের।
২০১২ সালে ইউনিপে টু ইউতে বিনিয়োগ করা অর্থ আদায়ের জন্য মো. মিজানুর রহমানসহ পাঁচ বিনিয়োগকারী ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে তারা ৬৫ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১৫৪ টাকার ডিক্রি পান। এ আদেশ কার্যকরের জন্য ২০১৪ সালে একই আদালতে তারা মানি এঙিকিউশন মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকায় ২০১৫ সালের ৯ মার্চ তাদের আবেদন না মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর মো. মিজানুর রহমানসহ পাঁচজন বিনিয়োগকারী অর্থ ফেরত পেতে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের ২০১৫ সালের ৯ মার্চ দেওয়া আদেশ বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ৫ মার্চ রায় দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইউনিপে টু ইউর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুদকের করা মামলায় ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৩ রায় দেন। রায়ে ইউনিপে টু ইউর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৬ জন কর্মকর্তাকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ইউনিপে টু ইউর নামীয় ও আসামিদের পরিচালিত সম্পত্তির পাশাপাশি মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অবরুদ্ধ ৪২০ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়।