দশ মাস আগে বিয়ে করে সংসারী হয়েছিলেন। টুকটাক কাজ করে স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল দিন। সময় গড়িয়ে স্ত্রী এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু অনাগত সন্তানের মুখ দেখা আর হল না মো. আব্দুস শুক্কুরের (১৮)। গতকাল নির্মাণাধীন সীমানা দেয়াল ধসের ঘটনায় অকালেই ঝরে গেল তার প্রাণ। একই ঘটনায় মো. সালাহউদ্দিন (২০) নামে আরো একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্কুর তুলাতলী এলাকার মনু মিয়ার ছেলে। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা হলেও দীর্ঘ সময় ধরে তারা এখানেই থাকছেন। ৩ ভাই, ৩ বোনের মধ্যে সবার ছোট শুক্কুর। তবে বড় দুই ভাইয়ের আগেই বিয়ে করেছেন তিনি। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকতেন। এর মাঝে হঠাৎ মর্মান্তিক ঘটনা যেন মেনে নিতে পারছেন না শুক্কুরের চাচা মো. আলমগীর হোসেন।
তিনি আজাদীকে বলেন, ২০/২৫ দিন ধরে সীমানা দেয়াল নির্মাণের কাজ করছিল শুক্কুর। এর মাঝে এই ঘটনা। আর কদিন পর তাদের ঘর আলো করে সন্তান আসতো। কিন্তু অনাগত সন্তানটি জন্মের আগেই তার বাবাকে হারালো। আর বাবাও তার অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারল না। বউটা এখন এ শোক কেমনে সইবে? আল্লাহ যেন এমন ঘটনা আর কারো জীবনে না ঘটান।
এদিকে, একই ঘটনায় একমাত্র ভাই সালাহউদ্দিনকে হারিয়ে নির্বাক তার ২ বোন রিমা আক্তার ও পুতুলি। ঘটনাস্থলে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তারা। স্বজনদের আর্তনাদে ওই এলাকার বাতাসও যেন ভারি হয়ে আসে।
এনায়েত বাজার এলাকার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক জানান, ৫/৬ বছর আগে সালাহউদ্দিনের বাবা মারা যান। বছর চারেক আগে মারা যান মা। তার দুই বোনের মাঝে একজনের বিয়ে হয়েছে। আরেক বোন আমার বোনের বাসায় থাকে। সালাহউদ্দিন বিয়ে করেনি। বোনদের সঙ্গেই থাকতো সে। যখন যা পাওয়া যেত, সে কাজই করতো। মা-বাবার পর একমাত্র ভাইকেও হারাল দুবোন।