উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর দারুস সালাম থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা আমির হামজাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। সেখানে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামকে ‘শক্তিশালী করার জন্য’ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাজেরো গাড়ি নিয়ে ঘুরতেন আমির হামজা। ‘জননিরাপত্তা বিঘ্নিত ও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার জন্য’ কাজ করতেন তিনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান গত ২৮ মার্চ আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন। ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বুধবার বিষয়টি জানান। খবর বিডিনিউজের।
আমির হামজা ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন– মেহেদী হাসান, অলিউন নবী সবুজ, মো. কাদের কিবরিয়া সাগর ও এম যুবায়ের আহমেদ। এছাড়া মামলায় মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, তাসনিমুল করিম রিজভী ও আব্দুল্লাহ আল আমিনের নাম এলেও অভিযোগের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। সেখানে বলা হয়েছে, আমির হামজা ওয়াজ মাহফিলে নিরীহ নাগরিকদের ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি’ দিয়েছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তিনি জননিরাপত্তা ‘বিঘ্নিত’ করতে এবং জিহাদে অংশগ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতেন।
আসামি যুবায়ের আহমেদ সম্পর্কে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তিনি ‘নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যপদ গ্রহণ, আদর্শ ও সত্তাকে সমর্থন, অপরাধ সংঘটনের জন্য ষড়যন্ত্র এবং অপরাধ সংঘটনের’ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপপরিদর্শক মো. মোকলেছুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের পাশে রাস্তায় সমবেত হয়ে গোপন বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছিল কয়েকজন। খবর পেয়ে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়। পরের বছর ৫ মে ঢাকার সংসদ ভবন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার এক তরুণ পুলিশকে আমির হামজার ওয়াজের বিষয়ে তথ্য দেয়। আবু সাকিব ওরফে আল আমিন নামের ২২ বছর বয়সী ওই তরুণ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। উগ্রবাদী ওয়াজ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ‘তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলার’ পরিকল্পনা করছিলেন। এরপর ২০২১ সালের ২৪ মে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ডাবিরাভিটা থেকে আমির হামজাকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম পুলিশ। পরে তাকে শেরেবাংলা নগর ও দারুস সালাম থানার দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দুই মামলায় জামিন পাওয়ার পর ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান আমির হামজা।