প্রায় তিন বছর হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইনডোর নেই। স্টেডিয়ামের যে অংশে ইনডোর ছিল সে জায়গা দিয়ে চিটাগাং আউটার রিং রোডের ওভারপাস যাওয়ায় সেটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। পরিবর্তে স্টেডিয়ামের উত্তর পূর্ব পাশে নতুন করে আধুনিক একটি ইনডোর নির্মাণ করে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। যেই কথা সেই কাজ। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে শুরু হয়ে যায় দৃষ্টি নন্দন এই ইনডোর নির্মাণের কাজ। কথা ছিল ২০২১ সালের মধ্যে তা শেস হয়ে যাবে। কিন্তু শুরুতেই গতি থাকলেও কাজ যতই গড়িয়েছে ততই গতি কমেছে। ফলে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি এই ইনডোর নির্মানের কাজ। কখনো তিন মাস পর, কখনো ছয় মাস পর এভাবে করতে করতে প্রায় আড়াই বছরের মত পার হয়ে গেছে এরই মধ্যে। তবে এবার বোধহয় আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে পরিপুর্ন ইনডোর। কদিন আগে বিসিবি পরিচালক আকরাম খান সাক্ষাত করেন সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম চৌধুরী দোভাষের সাথে। সে সাক্ষাতে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইনডোরের কাজ শেষ করার আহবান জানান আকরাম খান। আর তাতে সম্মতি দিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান তেমনটি জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা।
করোনার কারণে ২০২০ সালে কাজ শুরু হরেও কাজের গতি ছিল কম। এমনকি মাঝে মাঝে বন্ধও ছিল। তার উপর বিদেশ থেকে আসতে পারেনি নানা সামগ্রী। তবে যেহেতু সিংহভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে সেহেতু বাকি কাজ শেষ করতে খুব বেশি সময় লাগবেনা বলে মনে করছেন বিসিবির কর্মকর্তারা। যদিও এমন কথা অনেকবারই বলা হয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু সে সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবারে বিসিবি এবং সিডিএ উভয় পক্ষই চাইছে কাজটি দ্রুত শেষ করতে। বিসিবির জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী রুবেল খান জানিয়েছেন এরই মধ্যে ইনডোরের নেট চলে এসেছে। কেবল গ্লাসের কাজটা বাকি। আর সেটা হয়ে গেলেই নতুন ইনডোর চালু করা যাবে। দারুন দৃষ্টিনন্দন এই ইনডোরের অবকাঠামো সহ ভেতরের অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বরং সেগুলো শেষ হয়ে বসে আছে অনেক দিন। কিন্তু অল্প কাজ বাকি থাকায় এতদিন চালু করা যায়নি ইনডোরটি। যদিও এবারে বিসিবি এবং সিডিএ উভয় পক্ষই আশাবাদী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে ইনডোরের কাজ। আর সেটা হয়ে গেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচাইতে সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন ইনডোরের মালিক হবে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম।
ইনডোরটি ভাঙ্গার পর থেকে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আর সে গুলোতে ইনডোর ব্যবহার করা যায়নি। যা একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুর জন্য মোটেও সুখকর কোন বিষয় নয়। কারন যেকোন ক্রিকেটার যেকোন সময় ইনডোরে অনুশীলন সুবিধা চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে সে সুবিধা দেওয়া না গেলে বদনামই হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভেন্যু সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে ভাগ্য ভাল যে এই সব সিরিজে ইনডোরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়নি। যদি পড়তো তাহলে সমস্যায় পড়তে হতো বিসিবিকে।
এদিকে স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুমের সামনে দিয়ে যাওয়া ওভারপাসের বাকি অংশের নির্মান কাজও যাতে দ্রুত শেষ করা হয় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে সিডিএ এবং বিসিবির কর্মকর্তাদের মধ্যে। বিসিবির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে দ্রুতই যেন ওভারপাসের এই অংশটার কাজ শেষ করে যেন স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। বিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান সে বিষয়েও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। যাতে দ্রুত ওভারপাসের সে অংশের কাজ শেষ সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন দেখার বিষয় সবশেষ বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শেষ হয় কিনা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ইনডোরের কাজ।