৬ দিন পর ছাড়া পেলেন চন্দনাইশের হাশিমপুর থেকে অপহৃত ঠিকাদার মো. মোজাম্মেল হক তালুকদার (৪৫)। তিনি বলছেন, এর জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। গত ৯ মার্চ হাশিমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাশিমপুর নাসির মোহাম্মদ পাড়ার বরুমতি খাল এলাকায় সাইডে কাজ করার সময় একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আবদুর রহমানের বাড়ি এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। অপহৃত মোজাম্মেল মিডিয়ার সামনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাওয়ার বিষয়টি বললেও মুক্তিপণ দেয়ার ব্যাপারে পুলিশকে কিছুই বলেননি বলে জানিয়েছেন চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন।
ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোজাম্মেল হক নামের ওই ব্যক্তি সাবেক মেম্বার আবদুর রহমানের বাড়ি এলাকায় এসে স্থানীয়দের সহায়তা চান। এ সময় স্থানীয়রা তাকে খবর দিলে তিনি ও ধোপাছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মোজাম্মেলের পরিবারকে খবর দিই। খবর পেয়ে তার ছেলে ও বন্ধু ঘটনাস্থলে এলে আমরা তাকে তাদের কাছে সোপর্দ করি।
অপহৃত মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানান, অপহরণকারীদের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা সোমবার সকালে বান্দরবানের রেইচা এলাকায় তাদের দেখানো স্থানে আমার স্ত্রী ও ছেলে গিয়ে দিয়ে আসে। ওইদিন সন্ধ্যার পরপরই তারা আমাকে পাহাড়ি পথে হাঁটিয়ে ধোপাছড়ির গহীনে একটি সেগুন বাগানে ছেড়ে দেয়। দীর্ঘক্ষণ হাঁটার পর সামনে পড়া একটি বাড়ির লোকজনের সহায়তা চাই। এ সময় স্থানীয়রা আমাকে দেখে চন্দনাইশ হাসপাতালে নিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, ৯ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাশিমপুর নাসির মোহাম্মদপাড়ায় সাইডে কাজ করার সময় ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী মো. মোজাম্মেলকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ওইদিন বিষয়টি চন্দনাইশ থানায় অবহিত করেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার রাতে তাকে উদ্ধারের পর চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। গতকাল বিকালে তিনি আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত মোজাম্মেল বর্তমানে বাড়িতে আছেন এবং সুস্থ আছেন।
১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তিপণ দেয়ার বিষয়ে তিনি পুলিশকে কিছু বলেননি। এমনকি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতেও মুক্তিপণ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। সুতরাং মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাওয়ার ব্যাপারে কোনো সত্যতা নেই।