রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের দুর্গম চান্দবীঘাট পাড়ায় ‘অজ্ঞাত রোগে’ আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক দল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় সদস্যের চিকিৎসক দলটি চান্দবীঘাট পাড়ায় পৌঁছায়। পরে সেখানে তিন ভাগে ভাগ হয়ে গ্রামের আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়।
চান্দবীঘাট পাড়ার গ্রামপ্রধান (কারবারি) শিব রতন চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চিকিৎসক দলটি গ্রামে পৌঁছানোর পর গ্রামের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। গ্রামবাসী তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ওই গ্রামে বর্তমানে ১৪ রোগী ওই রোগে আক্রান্ত রয়েছেন। ভূষণছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওর্য়াডের ইউপি সদস্য প্রীতিশংকর দেওয়ান জানান, মেডিকেল টিম আসার পর তারা ভাগ হয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করেছেন। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রোগীরা এতদিন গ্রামের কবিরাজি (বৈদ্য) চিকিৎসা নিলেও আজ থেকে তারা মেডিকেল টিমের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে, বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংক্যছিং মারমা সাগর বলেন, পায়ে হেঁটে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে গ্রামে পৌঁছে আমরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে রোগীদের ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করি।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, ‘সকালে আমাদের মেডিকেল টিম সেখানে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে দিয়েছে। পুরো গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে স্ক্যানিং করা হচ্ছে। সবার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র যা লাগে পাঠানো হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যেন কারো প্রাণহানি না ঘটে। এখন যেহেতু চিকিৎসার আওতায় চলে আসছে; আশা করি আর বড় ধরনের কোনো অসুবিধা হবে না।’
প্রসঙ্গত, রাঙামাটির বরকল উপজেলার ৪ নম্বর ভূষণছড়া ইউনিয়নের ১৪৯ নম্বর গুইছড়ি মৌজার চান্দবীঘাট পাড়ায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল গত জানুয়ারিতে। ওই মাসের ১০ জানুয়ারি প্রথমজনের মৃত্যু হয়। তবে বিষয়টি অগোচরেই থেকে যায়। আক্রান্ত রোগীদের উপসর্গ হিসেবে শরীরে হঠাৎ করে ব্যথা অনুভব, তীব্র তাপমাত্রায় জ্বর আসে, বমি বমি ভাব হয়; কেউ কেউ রক্ত বমিও করে। ১০ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাবা–মেয়েসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে আক্রান্ত রয়েছেন ১৪ জন।
