১০২ রানের জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিল্লিতে আজ শনিবার(৭ অক্টোবর) তারা বিশ্বকাপ ইতিহাসের দলীয় সর্বোচ্চ ৪২৮ রানের পুঁজি গড়ে লঙ্কানদের আটকে দেয় ৩২৬ রানে।
এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক কয়েকজন। শুরুতে উইকেট হারানোর পর দুইশ’ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত শতকের দেখা পান কুইন্টন ডি কক ও রাসি ফন ডার ডাসেন। বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন এইডেন মারক্রাম। ৫৪ বলে ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় ১০৬ রান করে ম্যাচের সেরা অবশ্য তিনিই।
ওপেনার ডি কক ৮৪ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ১০০ রান। ফন ডাসেনের ব্যাট থেকে ১১০ বলে ১০৮ রান আসে ১৩ চার ও ২ ছক্কার সুবাদে। তাদের হাত ধরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুইশ’ রানের (১৭৪ বলে ২০৪) জুটি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
শ্রীলঙ্কার তিনজন পঞ্চাশ ছুঁলেও তিন অঙ্কে যেতে পারেননি কেউই। কুসাল মেন্ডিস ৪২ বলে ৭৬, চারিথ আসালাঙ্কা ৬৫ বলে ৭৯ ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা ৬২ বলে করেন ৬৮ রান।
দুই দল মিলে ম্যাচে রান হয়েছে মোট ৭৫৪, বিশ্বকাপের এক ম্যাচে যা সর্বোচ্চ। ২০১৯ আসরে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ ম্যাচের ৭১৪ রান ছিল আগের সেরা।
এই ম্যাচে বাউন্ডারি (চার ও ছক্কা) হয়েছে মোট ১০৫টি, এটিও বিশ্বকাপে রেকর্ড। ২০১৫ আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-নিউ জিল্যান্ড ম্যাচের ৯৩ বাউন্ডারি ছিল আগের সর্বোচ্চ।
দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ওই জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ডি কক ও ফন ডাসেন।
ডি কক তিন অঙ্কে পা রাখেন ৮৩ বলে। ১৭টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির পর বিশ্বকাপে প্রথম শতক পেলেন তিনি, ১৮ ইনিংসে।
ডি ককের মতো ফন ডাসেনও বিদায় নেন শতক ছোঁয়ার পরপরই। ৩১তম ওভারে উইকেটে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন মারক্রাম। শতক স্পর্শ করেন স্রেফ ৪৯ বলে। তার রেকর্ডের পাশাপাশি বিশ্বকাপে এক ইনিংসে তিন শতকের দেখা মেলে প্রথমবার।
রান উৎসবের ম্যাচ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার শুভসূচনা
শেষ দিকে ডেভিড মিলারের ২১ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংসে চারশ ছাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শ্রীলঙ্কাও উইকেট হারায় দ্বিতীয় ওভারে। পাথুম নিসানকাকে বোল্ড করে ফেরানো মার্কো ইয়ানসেন পরে বিদায় করে দেন আরেক ওপেনার কুসাল পেরেরাকেও।
তিনে নামা মেন্ডিস ঝড় তোলেন এক প্রান্তে। ফিফটি করেন তিনি স্রেফ ২৫ বলে। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে থামান রাবাদা। ৪২ বলে ৮ ছক্কা ও ৪টি চারে গড়া তার ৭৬ রানের ইনিংসটি।
পরের ওভারে শ্রীলঙ্কা উইকেট হারায় আরেকটি। সাদিরা সামারাউইক্রামার বিদায়ের পর টিকতে পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও।
দেড়শর মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর পর আসালাঙ্কা ও শানাকার ফিফটিতে পরাজয়ের ব্যবধান কেবল কমাতে পারে শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৪২৮/৫ (ডি কক ১০০, বাভুমা ৮, ফন ডাসেন ১০৮, মারক্রাম ১০৬, ক্লাসেন ৩২, মিলার ৩৯*, ইয়ানসেন ১২*; রাজিথা ১০-১-৯০-১, মাদুশানকা ১০-০-৮৬-২, শানাকা ৬-০-৩৬-০, ধনাঞ্জয়া ৪-০-৩৯-০, পাথিরানা ১০-০-৯৫-১, ওয়েলালাগে ১০-০-৮১-১)
শ্রীলঙ্কা: ৪৪.৫ ওভারে ৩২৬ (নিসানকা ০, পেরেরা ৭, মেন্ডিস ৭৬, সামারাউইক্রামা ২৩, আসালাঙ্কা ৭৯, ধনাঞ্জয়া ১১, শানাকা ৬৮, ওয়েলালাগে ০, রাজিথা ৩৩, পাথিরানা ৫, মাদুশানকা ৪*; এনগিডি ৮-১-৪৯-১, ইয়ানসেন ১০-০-৯২-২, রাবাদা ৭.৫-০-৫০-২, মহারাজ ১০-০-৬২-২, কুটসিয়া ৯-০-৬৮-৩)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১০২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: এইডেন মারক্রাম