চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় চরতী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরতী এলাকায় বন্যার পানিতে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৪ জনের মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে ৪ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ দুরদুরি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আজ বুধবার (৯ আগস্ট) বিকালে।
অন্যান্য নিখোঁজের সন্ধানে চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, স্থানীয় জনগণ এবং বিশেষ উদ্ধারকারী দল সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে সাতকানিয়ার বেশ কিছু এলাকায় আশংকাজনকভাবে পানি বৃদ্ধি পায়। এ পানিতে নৌকা নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার সময় গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চরতি ইউনিয়নের চরতি থেকে সুইপুরা যাওয়ার সময় চরতি ও সুইপুরার মধ্যবর্তী এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় নৌকায় থাকা বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ চরতির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আরিফের কন্যা সানজিদা আক্তার(৪), মো. সেলিমের পুত্র মো. শহিদুল ইসলাম(৩) ও আবদুর রহিম(৪৫) নিখোঁজ রয়েছে।
নিখোঁজ শিশু সানজিদা আক্তারের পিতা আরিফুল ইসলাম জানান, সানজিদাকে নিয়ে তিনি দক্ষিণ চরতিতে তার নানার বাড়ি গিয়েছিলেন। বিকালের দিকে নৌকায় নিজ বাড়ি কাঞ্চনায় ফেরার সময় স্রোতের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে খুুঁজে পাননি।
এদিকে, মো. সেলিমের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস, পুত্র মো. শহিদুল ইসলাম নিখোঁজ থাকলেও তাদের মধ্যে জন্নাতুল ফেরদৌসের মরদেহ দুরদুরি এলাকা থেকে বুধবার বিকালে উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল।
চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “শিশুসহ চারজন নিখোঁজ ছিল। তাদের উদ্ধারের জন্য স্থানীয় জনগণ ও উদ্ধারকারী টিম নিয়ে নৌকা করে সম্ভাব্য সকল স্থানে সন্ধান করা হচ্ছে। বুধবার বিকালে দুরদুরি এলাকা থেকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মরদেহ দুরদুরি এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে।” এছাড়া অন্যান্যদের উদ্ধারে নানাভাবে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে এবং পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশের বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। প্রধান সড়ক দিয়ে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হওয়ায় রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ এলাকার সব বাড়িঘর এখন ৭-৮ ফুট পানির নিচে। বন্যাকবলিত হয়ে পানিবন্দী অন্তত কয়েক লাখ মানুষ। বসতঘর ছেড়ে অনেকেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উঁচু স্থান ও এলাকার বহুতল ভবনে আশ্রয় নিয়েছে, অনেকে নিজ ঘরেই পানিবন্দী অবস্থায় আছে।
এদিকে, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ হয়ে যে সব গাড়ি কক্সবাজার যাতায়াত করত সেই সব গাড়িগুলো বিকল্প পথ হিসাবে বাঁশখালী দিয়ে যাতায়াত করছে।
তবে মহাসড়কে পানি আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও বিভিন্ন স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।












