রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর প্রবাসী ইউসুফ আলী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি স্কুল শিক্ষক মুহসিনুল হককে (৫৬) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার (২৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মুহসিনুল হক উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলি গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে এবং জঙ্গল বগাবিলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বগাবিলি গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন ইউপি সদস্য পদে বিজয়ী আবু তৈয়বের বড় ভাই প্রবাসী ইউসুফ আলী। শিক্ষক মুহসিনুল হক এই মামলার অন্যতম আসামি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এসইউএম নুরুল ইসলাম বলেন, “ইউসুফ আলীর ওপর নৃশংসভাবে হামলার পর তিনি যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন তখন এই মামলায় শিক্ষক মুহসিনুল হক নিম্ন আদালত থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত জামিন নিয়েছিলেন। তিনি জামিনে গিয়ে জামিনের অপব্যবহার করেছেন মর্মে তদন্তে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে মারা যান প্রবাসী ইউসুফ আলী। তাই ১৫ মার্চ নিম্ন আদালতে জামিন পাবেন না জেনে তিনি প্রতারণার আশ্রয় নেন৷ তিনি নিম্ন আদালতে অন্তবর্তীকালীন জামিনের কথা গোপন রেখে ১৫ মার্চের আগে উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে নেন। ছয় সপ্তাহের মধ্যে তিনি উচ্চ আদালতের আদেশ মতে দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তার প্রতারণার বিষয়টি আদালতের নজরে আনি আমরা। এতে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।”
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাণীরহাট থেকে রাজানগরের বগাবিলী গ্রামে যাওয়ার পথে ইউসুফের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার ওপর হামলা চালায় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ(চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ইউসুফ আলীর স্ত্রী শাহিনুর আকতার বাদী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজগর আলীসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
ইউপি নির্বাচনে তৈয়বের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজগর আলী পরাজিত হয়ে তার লোকজন নিয়ে এ হামলা চালিয়েছিল বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত আজগর, মামুন, সাগর, আবু বক্কর গ্রেফতার হয়েছে। এখনো পলাতক রয়েছে আরও ৭ জন আসামি।
নিহতের ছোট ভাই ইউপি সদস্য মো. আবু তৈয়ব বলেন, “শিক্ষক মুহসিনুল হক এলাকায় নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত। তিনি ২০০৫ সালে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামি ছিলেন। নির্বাচনের পর তারা সবাই মিলে প্রথমে আমার এক সমর্থকের ওপর হামলা চালান। এরপর আমাকে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। এর কয়েকদিনের মধ্যে আমার ভাইকে তারা পরিকল্পতিভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন।”