দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এক শ্রমিককে খুনের মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি রাখা নিয়ে বিতণ্ডার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আজ শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত নগরীর বাকলিয়া, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান কোতোয়ালি থানার এসআই মৃণাল কান্তি মজুমদার।
গ্রেফতার ২২ বছর বয়সী মো. সোহাগ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তদন্তে নেমে ‘সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায়’ একই বয়সের সাইদুল হোসেনকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মৃণাল বলেন, “গত ১৭ অক্টোবর সকালে মাসুদ নামের এক শ্রমিকের সঙ্গে গাড়ি পার্কিং নিয়ে বিতণ্ডা হয় রাসেল নামে এক পিকআপ চালকের। এর জেরে রাসেল গ্রেপ্তার দুজনসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে সন্ধ্যায় মাসুদের ওপর হামলা চালায়। মারধরের এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় মাসুদ।”
ওই ঘটনায় মাসুদের ছেলে বাদী হয়ে রাসেল, সোহাগ ও সাদ্দাম নামে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এসআই মৃণাল বলেন, “হামলার ঘটনায় আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়। মূল অভিযুক্ত রাসেলকে ধরতে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে টানা অভিযান চালানো হয় কিন্তু তাকে ধরা যায়নি। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাকলিয়া থানার মোজাহের কলোনি এলাকা থেকে সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। সোহাগের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাশীপুর এলাকা থেকে গভীর রাতে সাইদুলকে গ্রেফতার করা হয়।”
তিনি বলেন, “সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ঘটনার দিন সকালে রাসেলের সাথে গাড়ি পার্কিং নিয়ে শ্রমিক মাসুদের কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যায় রাসেল প্রতিশোধ নিতে তাদের নিয়ে মাসুদের ওপর হামলা করতে যায়। মাসুদকে মারধরের সময় সে নিজেকে বাঁচাতে হাতে থাকা মালামাল উঠানো-নামানোর হুক দিয়ে তাদের ওপর উল্টো আঘাতের চেষ্টা করে। এসময় সাইদুল তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে মাসুদকে আঘাত করে।”
সাইদুলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর হাজী আমিনুর রহমান সড়কের একটি খোলা জায়গা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধারের কথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মাসুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দিনভর কাজ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান শ্রমিকরা। রাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা কাজে যোগ দিলেও হামলাকারীকে ধরতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন সেই সময়।
বুধবার চিকিৎসাধীন মাসুদের মৃত্যু হলে কাজ বন্ধ রেখে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ-ব্যবসায়ী ও শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিশ্রুতি পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তারা কাজে ফেরেন।