সিআরবিতে নয়, হাসপাতাল কুমিরায় করার মত

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ১১ মে, ২০২২ at ৪:১৪ অপরাহ্ণ

নগরীর সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতার আন্দোলনের মধ্যে বিকল্প স্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে।

যদি হাসপাতাল সিআরবিতে না হয়, সেক্ষেত্রে কোথায় হতে পারে তা নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় রেলওয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া যক্ষা হাসপাতাল এলাকায় হাসপাতালটি হতে পারে বলে মত এসেছে।

অন্যদিকে, সংসদীয় কমিটিতে এই আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন আন্দোলনকারীরা।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় সংসদীয় কমিটির সভায় সিআরবিতে প্রস্তাবিত হাসপাতালের বিকল্প স্থান নিয়ে আলোচনা তোলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রামের রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প হচ্ছে পিপিপির আওতায়। এটিসহ বিভিন্ন প্রকল্প কেন হচ্ছে না তা নিয়ে সংসদীয় কমিটির সভায় জানতে চাওয়া হয়েছিল। এটি আলাদা কোনো এজেন্ডা হিসেবে আলোচনা হয়নি। চট্টগ্রামের জন্য হাসপাতাল দরকার। এটি যদি চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় না হয় তাহলে অন্য কোনো জায়গায় হতে পারে। চট্টগ্রামের স্বার্থে এটি হতে হবে। সেই কারণে কুমিরা এলাকায় রেলের জমিতে করার কথা তুলেছি।”

পিপিপির আওতায় হাসপাতাল প্রকল্পটির গুরুত্ব তুলে ধরে ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, “এখানে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইন্সটিটিউট হবে। সুতরাং চট্টগ্রামবাসীর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করেছি, সভায় রেকর্ড হয়েছে।”

পূর্ব রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কুমিরা রেল স্টেশনের কাছে যক্ষা হাসপাতালটি প্রায় ৩০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সিআরবি’র বদলে সেখানেই রেলের প্রায় ১৩ একর জমিতে পিপিপি’র আওতায় হাসপাতাল হতে পারে বলে এখন আলোচনা হচ্ছে।

“বিকল্প প্রস্তাব যদি আসেও, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এতদিন তো কর্তৃপক্ষ সিআরবি এলাকাতেই হাসপাতাল করার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। এখন অন্তত বিকল্পের আলোচনা এসেছে। এটা ভালো দিক।”

চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ঐতিহ্যবাহী সিআরবিতে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ইউনাইটেড গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে রেলওয়ে।

গত বছরের জুলাই মাসে প্রকল্প এলাকার জমি হাসপাতাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়।

গত ১০ মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের আহ্বায়ক সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেন, “চট্টগ্রাম শহরে এখন কোনো উন্মুক্ত স্থান নেই বললেই চলে। ঢাকায় অনেক উদ্যান আছে, চট্টগ্রামে তাও নেই। একমাত্র বড় উন্মুক্ত স্থান এখন সিআরবি।”

বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী শতবর্ষী বৃক্ষশোভিত সিআরবিকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানোর কথাও তিনি বলেন।

সংসদীয় কমিটিতে বিকল্প নিয়ে আলোচনার খবরকে স্বাগত জানিয়ে অনুপম সেন বলেন, “কুমিরায় রেলের পরিত্যক্ত হাসপাতালের জমিতে প্রস্তাবিত হাসপাতাল প্রকল্প হলে ‘ভালোই হবে’।”

নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, “এটাও এক ধরনের অগ্রগতি। সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হওয়ায় আমরা আশাবাদী, সিআরবি রক্ষা পাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই জনস্বার্থ বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে মহাসড়ক পারাপারের সময় ব্যবসায়ীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসিআইইউর ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে মাইক্রোস্ট্রাকচারড ফাইবার বিষয়ক সেমিনার