“লালদীঘির পাড়ে পাগল নাচলেও এর কাছাকাছি মানুষ হয়”

বিএনপির রোডমার্চ পরবর্তী সমাবেশ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

| শুক্রবার , ৬ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব চট্টগ্রামে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রোডমার্চ শেষে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেখানে যে সংখ্যক মানুষ হয়েছে, চট্টগ্রামের লালদীঘির পাড়ে অনেক সময় যখন পাগল নাচে তখনও এর কাছাকাছি মানুষ হয়। সুতরাং তাদের কর্মসূচিতে লোক সমাগম সেভাবে হয়নি এবং তারা প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আশা করেছিল, বিদেশীরা তাদেরকে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, সেই আশাও বুমেরাং হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বিএনপি মহাসচিব বলেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না, এতেই প্রমাণিত হয় তারা নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে কারণ তাদের কর্মসূচি ও সমাবেশগুলোতে মানুষ হচ্ছে না। ফলে তারা বুঝতে পেরেছে নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা নাই, তাই নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে। এজন্য নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার পথে তারা হাঁটছে।”

আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে একুশে পত্রিকা’র সদ্যপ্রয়াত সম্পাদক আজাদ তালুকদারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল ও শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।

এরপর চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে বিএনপি বলেছে, এই অক্টোবর হলো তাদের বিজয়ের মাস, সরকারকে ১৮ তারিখের মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “এরকম আল্টিমেটাম তো বিএনপি গত ১৩-১৪ বছরে বহুবার দিয়েছে। গত ডিসেম্বরেও তাদের আল্টিমেটাম ছিল, তারপর খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশ পাঠানোর আল্টিমেটামও ছিল। এখন ১৮ তারিখ আবার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এই বছরের ১৮ তারিখ নাকি আগামী বছরের ১৮ তারিখ, নাকি তারও পরের বছরের ১৮ তারিখ সেটিও অনেকে প্রশ্ন রেখেছে। বিএনপি’র আল্টিমেটাম ফাঁকা বুলি ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়।”

তিনি বলেন, “বিএনপি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করে দেশের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার পথে হাঁটছে, সেটি এই দেশের মানুষ হতে দিবে না। যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং কেউ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালালে দেশের মানুষ যেমন প্রতিহত করবে, একইভাবে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া কখনো বিদেশীরাও সমর্থন করে না।”

মন্ত্রী বলেন, “অনেক হাঁকডাক করে বিএনপি একটা রোডমার্চ করেছে, সেখানে আশানুরূপ মানুষ হয় নাই। আমি দেখতে পেলাম গতকাল তারা কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম আসার পথে প্রচণ্ড যানজট তৈরি করা ছাড়া লোকসমাগম করতে পারেনি।”

এর আগে শোকসভায় প্রয়াত একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “তিনি একজন লড়াকু মানুষ ছিলেন। তিনি যেমন অকুতোভয় সাংবাদিক ছিলেন, একই সাথে একজন লড়াকু মানুষ ছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার পরও তিনি কিন্তু ক্ষান্ত হননি, দমে যাননি। ক্যান্সারের সাথে অবিরত লড়াই করেছেন। তিনি জানতেন ধীরে ধীরে তার জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। মৃত্যুর ক’দিন আগে আমি যখন হাসপাতালে তাকে দেখতে যাই তখন তিনি যেভাবে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং মৃত্যুর পর কী করতে হবে সেই দুয়েকটি কথাও আমাকে বলেছেন। একটা মানুষ জানেন, তিনি মৃত্যুপথযাত্রী, এরপরও অবিচল, সেই চারিত্রিক দৃঢ়তা আমি তার মধ্যে দেখেছি।”

আজাদ তালুকদার একজন অকুতোভয় সাংবাদিক ছিলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রামের অনেক বিষয় অনেকের চোখ এড়ালেও তার চোখ এড়ায়নি। অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তির বিরুদ্ধেও সঠিক রিপোর্টটি করেছেন, যেটি কেউ সাহস করে করেননি। অসংখ্য পত্রিকার ভিড়ে একটা পত্রিকা দাঁড় করানো খুব সহজ কাজ নয়। আবার সেটি পাঠকপ্রিয়তা পাওয়া আরো কঠিন কাজ কিন্তু তিনি নিজে একা লড়াই করে কোনো বড় গ্রুপের কাছে বিক্রি না হয়ে একুশে পত্রিকা দাঁড় করিয়েছেন।”

একুশে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নজরুল কবির দীপু’র সভাপতিত্বে শোকসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মহসিন কাজী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, ক্রীড়া সম্পাদক সোহেল সরওয়ার প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির রোডমার্চে বাবার ছবি দেখে বিষপান করা ছাত্রলীগ নেতার পাশে তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধনেদারল্যান্ডসকে ২৮৭ রানের টার্গেট পাকিস্তানের