ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এখন বাংলাদেশ আপনাদের বিদায় দেখতে চায়। দয়া করে সময় থাকতেই মানে মানে কেটে পড়ুন। তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদেরকে বিদায় করবে।”
আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিভিন্ন দাবিতে ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লায় এ জনসভা আয়োজিত হয়।
কুমিল্লাকে নিয়ে গঠন হতে যাওয়া বিভাগের নাম সরকার ‘মেঘনা’ করার উদ্যোগ নিলেও ক্ষমতায় গেলে ‘কুমিল্লা’ নামেই তা প্রতিষ্ঠার ঘোষণাও দেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সমাবেশের প্রশ্ন রেখে বলেন, “কী গোমতী হবে, না কুমিল্লা হবে? কুমিল্লা।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমি বলতে চাই, এই কুমিল্লা ঐতিহাসিক কুমিল্লা। এই কুমিল্লা নিয়ে আমরা গর্বিত। আজকের সরকারপ্রধান কুমিল্লার জনগণকে দেখতে পারেন না। কুমিল্লাকে সেই সরকার আপনারা দেখেছেন নানাভাবে অপবাদ দেয়। আমরা এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই, চাঁদপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা উত্তর, কুমিল্লা দক্ষিণ এবং কুমিল্লা মহানগরের জনগণ ‘কুমিল্লা’র নামে দেখতে চায়।”
কুমিল্লার দাউদকান্দির সাবেক এই এমপি বলেন, “আজকের সরকার প্রধান যদি হীনমন্যতার পরিচয় দিয়ে আমাদের ঐহিত্যবাহী কুমিল্লার নামকে অন্য নামে পরিচিত করতে চান- আমরা কুমিল্লাবাসী ওটা মানব না, মানতে পারি না।”
আগামীকাল রবিবার অনুষ্ঠেয় প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভার আলোচ্যসূচিতে নতুন দুই বিভাগ ‘মেঘনা’ ও ‘পদ্মা’ অনুমোদনের প্রস্তাব ওঠার কথা রয়েছে।
বৃহত্তর কুমিল্লা ও আশপাশের জেলাগুলো নিয়ে ‘মেঘনা’ (বিএনপি নেতাদের ভাষায় ‘গোমতী’) এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের জেলাগুলোকে নিয়ে ‘পদ্মা’ বিভাগ করতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমান দেশে বিভাগের সংখ্যা ৮টি। এগুলো হচ্ছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ।
আগের রাত থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ টাউন হল ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় এ সমাবেশ শনিবার সকাল ১১টা শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৫টায়। মাঠের আশপাশের এলাকাও নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ‘জনসমুদ্রে’ রূপ নেয়। হলুদ-লাল টুপি ও রঙিন গেঞ্জি পরিহিত নেতাকর্মীরা অনেকের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, জাতীয় পতাকা ও ধানের শীষ দেখা গেছে। কুমিল্লা ছাড়াও ব্রাক্ষণবাড়িয়া, চাঁদপুর জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা এ সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশের মঞ্চে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য তাদের ছবি রেখে আসন সংরক্ষিত রাখা হয়।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ‘হত্যার প্রতিবাদে’ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের এ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে বিএনপি।
সমাবেশে ‘গুম হওয়া’ সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজের ছেলেরা এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ‘পুলিশের গুলিতে’ নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার বাবা রহমত উল্লাহ বক্তব্য রাখেন।












