ফখরুলকে অফিসে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৪:০৬ অপরাহ্ণ

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দিন আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিএনপি কার্যালয়ে যেতে না পেরে ক্ষুব্ধ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ‘নস্যাৎ’ করতেই সরকারের এ ‘চক্রান্ত’।

তারপরও ১০ তারিখ সমাবেশ ‘হবে’ জানিয়ে ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “সমাবেশ যেন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে হতে পারে, তার জন্য আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। এর দায়-দায়িত্ব থাকবে সরকারের।”

অবশ্য বিএনপি আগামী শনিবার কোথায় সমাবেশ করবে, তা স্পষ্ট করেননি দলের মহাসচিব ফখরুল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, “এটা জানিয়েছি। আবার জানাব।”

গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষে প্রাণহানি এবং ব্যাপক ধর-পাকড়ের পর রাতেই বিএনপি কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে ফিরে দলীয় কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন দলের মহাসচিব ফখরুল। 

সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তার গাড়ি নাইটিঙ্গেল মোড়ে এলে পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যারিকেডে আটকে দেয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এবং মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ সময় মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার তাদের বলেন, “ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি অফিসে কারো প্রবেশাধিকার নেই।”

এরপর সেখানে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “আমি বিএনপি মহাসচিব। আমাকে আমার পার্টি অফিসে যেতে দেওয়া হলো না এবং তারা যে কথাগুলো বলছে এটা সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের ওখানে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। নাথিং ওয়াজ দেয়ার। তারা (পুলিশ) নিজেরা এসব করেছে, আপনারা (গণমাধ্যম) তা দেখেছেন।”

বিএনপি নয়াপল্টনের রাস্তাতেই ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ করতে চায়। পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিলেও তাতে তারা রাজি নয়।

বিএনপি নেতারা বলেছিলেন, পছন্দসই বিকল্প না দিলে নয়া পল্টনেই তারা ১০ তারিখের সমাবেশ করবেন। অন্যদিকে, পুলিশ ও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছিল, রাস্তায় কাউকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

এর মধ্যেই বিএনপি কর্মীরা গতকাল বুধবার তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে পুলিশ বিএনপিকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ ঘটনায় এক বিএনপি সমর্থক নিহত হন। সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে তিনশয়ে মতো নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। ভেতরে হাতবোমা পাওয়ার কথাও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে চক্রান্ত ও পরিকল্পনার প্লট, বিএনপিকে ম্যালাইন করার জন্য, আমাদের ১০ তারিখের যে সমাবেশ, তাকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য এটা সরকারের হীন পরিকল্পনা-চক্রান্ত। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য, মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করবার জন্য, আমাদের রাজনৈতিক অধিকারকে হরণ করবার জন্য…. রাজনৈতিক দল হিসেবে আমার নিজের অফিসে যদি যেতে না পারি, তাহলে কী করে একজন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী কাজ করবে?”

ফখরুল ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে যে, সে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। এখন একজন মহাসচিব, সে যদি তার অফিসেই যেতে না পারে, তাহলে এটা সম্ভব না। এখানে গণতন্ত্র তো দূরের কথা… আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”

অবিলম্বে বিএনপি অফিস খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, “আমাদের অফিসে যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। যাদেরকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি এবং যে নিহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে, তার তদন্ত করে তাকে বিনাকারণে যে হত্যা করা হয়েছে, সেটার প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধকে সে?
পরবর্তী নিবন্ধসিআইইউতে ‘অ্যাডমিশন ফেস্টিভ্যাল’