পর্যটক বাড়ছে কক্সবাজারে

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ at ১১:১১ অপরাহ্ণ

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পর পর্যটক বাড়ছে কক্সবাজারে। আজ সরকারি ছুটির দিনে আগের সপ্তাহের একই দিনের তুলনায় প্রায় ৫০% পর্যটক বাড়ে বলে জানান হোটেল মালিকরা। একইসঙ্গে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপকভাবে পর্যটক বেড়েছে বলে জানান ট্যুর অপারেটররা।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে আজ শুক্রবার পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পর প্রথম দিন ‘এমভি পারিজাত’ ও ‘এমভি রাজহংস’ নামের ২টি জাহাজে করে ৬১০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন যাওয়া-আসা করেছেন। এই রুটে মাত্র ২ দিন আগে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় প্রায় ১২শ’ যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ দু’টিতে আজ প্রায় অর্ধেক যাত্রী হয়েছে। তবে আগামীকাল শনিবার থেকে জাহাজ দু’টিতে যাত্রী বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে আজ শুক্রবার পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পর কক্সবাজারে পর্যটক বেড়েছে বলে জানান হোটেল মালিকরা।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, আজ শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে আগের সপ্তাহের একই দিনের তুলনায় প্রায় ৫০% পর্যটক বেড়েছে কক্সবাজারে। আগের সপ্তাহের শুক্রবার যেখানে কক্ষ বুকিং ছিল ৬৫% এর মতো, সেখানে আজ শুক্রবার বুকিং হয়েছে প্রায় ৯৫%।

জেলা প্রশাসনের সৈকতকর্মী মাহবুব আলমের মতেও কক্সবাজারে আগের শুক্রবারের তুলনায় আজ শুক্রবার পর্যটকের আনাগোনা অনেক বেশি ছিল। মেরিন ড্রাইভেও পর্যটকদের ভিড় ছিল বেশি।

কক্সবাজার সৈকতের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন জানান, গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শীত বাড়ার সাথে সাথে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে ছুটে আসছে ভ্রমণপিপাসু মানুষ। সপরিবারে অথবা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন মিলে বেড়াতে আসছেন সাগরপাড়ে। পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বার্মিজ মার্কেট, শুটকিপল্লী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও জাহাজে সেন্টমার্টিন দ্বীপে এবং স্পিডবোটে সোনাদিয়া দ্বীপে ভ্রমণে যাচ্ছেন।

আর কেউ কেউ যাচ্ছেন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধ মন্দির ও মহেশখালী আদিনাথ মন্দির পরিদর্শনে। পাশাপাশি ঘুরতে যাচ্ছেন কক্সবাজারের পার্শ্ববর্তী পার্বত্য বান্দরবান জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। তবে এতদিন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত থার্টি ফার্স্টের সময় থেকেই কক্সবাজারে প্রত্যাশিত পর্যটক নেই বলে জানান পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

এ নিয়ে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১১টি সংগঠন আন্দোলনে নামে। আর এই রুটে জাহাজ চালুর পর পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ফিরে আসে স্বস্তি।

হোটেল মালিকরা জানান, প্রতি বছর দুই ঈদ এবং থার্টিফার্স্ট’র ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। তবে এবারের থার্টি ফার্স্টের ছুটিতে প্রত্যাশিত সংখ্যক পর্যটক আসেনি কক্সবাজারে।

এমনকি গত ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফার্স্ট’র দিন কক্সবাজারের হোটেলগুলোর ২০% ভাগ থেকে ৩০% ভাগ কক্ষ খালি ছিল বলে দাবি করেন হোটেল মালিকরা।

হোটেল মালিক নেতা আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারের প্রায় ৫শ’ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুবিধা রয়েছে। দুই ঈদের ছুটিতে হোটেলগুলোতে প্রায় শতভাগ বুকিং থাকে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, “কক্সবাজারে পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের বীচকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া একজন সার্বক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পর্যটন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় রয়েছে। পর্যটক হয়রানির কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, পর্যটকদের চাপের কথা মাথায় রেখে কক্সবাজারের রাস্তাঘাটে এবং পর্যটন স্পটসমূহে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া শহরের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সৈকতে গ্রহণ করা হয়েছে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রতি মাসে দাম সমন্বয় জনগণের সাথে খুচরা চালাকি
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা