কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারীসহ ১০ দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও ঘটনার প্রধান হোতারা ধরা পড়েনি গত পক্ষকালেও, উদ্ধার হয়নি লুন্ঠিত কোনো মালামালও।
উপরন্তু মামলা তুলে নিতে আসামীদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা ওই সংখ্যালঘুর বাড়িঘরে গিয়ে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার শহরতলীর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শক্তি এসআর মোটর্সে হামলার শিকার হন উজ্জল সেন নামের ওই ব্যবসায়ী।
এই ঘটনায় ১০ জনকে অভিযুক্ত করে পরদিন কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয় (মামলা নম্বর ৬৮/৩৫৩)।
হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, চুরি, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্প আদায়সহ বিভিন্ন আইনে দায়ের করা মামলাটির আসামীরা হলো কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প সিকদারপাড়া এলাকার আবদুল করিম প্রকাশ করিম মুন্সী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আত্মসমর্পণের পর সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পাওয়া আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারী শাহজাহান আনসারী, তার সিন্ডিকেটের সদস্য ও ছোট ভাই কাসেম, আবু সুফিয়ান, বড় ভাই রশিদ আনসারী, দক্ষিণ কলাতলীর লালু মিস্ত্রির ছেলে নুরুল আমিন প্রকাশ আমিন্যা চোরা, তার ছোট ভাই মোহাম্মদ কামাল, শহরের বাজারঘাটার আবুল কালামের ছেলে রাশেদুল করিম রাশেদ, করিম মুন্সীর ছেলে সাজেদুল করিম ও সায়েমুল করিম।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী উজ্জ্বল সেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল কিন্তু চাঁদা দিতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ইয়াবা গডফাদার করিম মুন্সী ও শাহজাহান আনসারীর নেতৃত্বে গত ২৯ মে তার (উজ্জ্বল সেন) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট চালায় তারা।
এসময় সন্ত্রাসীদের বাধা দেয়ায় তাকে হত্যারও চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা। এই ঘটনায় থানায় মামলা করার পর সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নিতে তার বাড়িঘরে গিয়ে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মামলার আসামীরা চিহ্নিত ইয়াবা গডফাদার ও কারবারী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে শাহজাহান আনসারী টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিমউদ্দিন জানান, এই ঘটনায় মো. কামাল নামের এক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামীসহ অন্য আসামীরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তাদের গ্রেফতারে বিলম্ব ঘটছে।