সংশোধন হচ্ছে ষষ্ঠ-সপ্তমের সব বই

আজাদী অনলাইন | সোমবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৩ at ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সবগুলো বই সংশোধন করা হচ্ছে।

নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তক হাতে আসার পর থেকে ভুল নিয়ে আলোচনার মধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দু’টি বই প্রত্যাহার এবং তিনটির সংশোধনের পর এবার নতুন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পক্ষ থেকে এখন নতুন করে জানানো হয়েছে, এ দুই শ্রেণির সব বইয়েই ভুল ও তথ্যগত অসঙ্গতিগুলোতে সংশোধনী আনা হচ্ছে যা ঈদের পরই পৌঁছে যাবে শিক্ষার্থীদের কাছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, “সংশোধনী আসবে এটি আমরা শুরু থেকেই বলেছি। এটা একটা পরীক্ষামূলক সংস্করণ। আগামী বছরে আমরা সব বইয়ে পুরো পরিমার্জন করে দেব। ২০২৩ এর জন্য যেগুলো গেছে সেগুলোর জন্য বানান ভুল বা তথ্যগত ভুল থাকলে সেটিও সংশোধন করে দেওয়া হচ্ছে।”

রোজার মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সংশোধনীগুলোর সফট কপি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। শিক্ষার্থীরা যা ছুটি শেষে স্কুল খোলার পর পাবে।

পরীক্ষা ও মুখস্ত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে নতুন শিক্ষাক্রমে যাওয়ার কথা বলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে এ বছর প্রাথমিক স্কুলে প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক বইয়ে পাঠদান শুরু হয়েছে।

আগামী বছর তা শুরু হবে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতেও নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।

আগামী বছর থেকে নবম শ্রেণিতে গিয়ে আর বিভাগ অনুযায়ী ভাগ হবে না। বিজ্ঞান, মানবিব ও ব্যবসায় শাখার বদলে সবাই মাধ্যমিকে একই পাঠ্যপুস্তক পড়বে। বিভাগ আলাদা হবে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে।

নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য নতুন বই রচনা করা হচ্ছে। এবার সেসব বই হাতে পাওয়ার পর থেকে ভুল ভ্রান্তির বিষয়টি সামনে আসে। কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়।

শিক্ষামন্ত্রী একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য পরীক্ষামূলক বই নিয়ে একটি ‘চিহ্নিত গোষ্ঠী’ অপপ্রচারে নেমেছে।

ভুলের বিষয়টি সামনে আসার পর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য প্রণীত ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের পাঠ্য বিষয় নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়।

পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনে এবং কেন ভুল হল তা তদন্তে দুই কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর প্রথমে সংশোধনের কথা বলা হলেও পরে এনসিটিবির পক্ষ থেকে বই দুটি পাঠদান হতে প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। পরে আরও তিনটি বইয়ে সংশোধনী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সবশেষ ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বইয়ে সংশোধনের সিদ্ধান্ত এলো। এ বিষয়ে এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান জানান, রোজার পর শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে এসব সংশোধনী করে দেবেন শিক্ষার্থীদের।

সব বই সংশোধনের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যত রকমের সমালোচনা আমরা পেয়েছি, সব আমলে নিয়েছি। সব বিষয়ের জন্য ছয়জন করে বিশেষজ্ঞকে দিয়ে আমরা রিভিউ করেছি, যারা বই লেখার সাথে যুক্ত ছিলেন না। তারা তিন দিন ধরে বই পড়ে তাদের বিশ্লেষণ করে মন্তব্য লিখে গেছেন। এতে এখন যে ভুল-ত্রুটি-অসঙ্গতি আছে তা ঠিক হল আর আগামী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্যও আমাদের কাজ হয়ে গেল।”

শিক্ষার্থীদের হাতে কীভাবে এসব সংশোধনী যাবে তা ব্যাখ্যা করে মশিউজ্জামান বলেন, “সংশোধনীগুলো অনলাইনে মাউশির মাধ্যমে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে পৌঁছে যাবে। প্রধান শিক্ষক তা শ্রেণি শিক্ষককে দেবেন। ধরা যাক বাংলা বইয়ে কোনো সংশোধনী থাকলে শ্রেণি শিক্ষক সংশোধনী দেখে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বলবেন বইয়ের এত নম্বর পৃষ্ঠায়, এই শব্দের বানান এরকম লেখা আছে, এটি এরকম হবে। এটা তিনি বোর্ডে লিখেও জানিয়ে দিতে পারেন।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে শ্যালো মেশিন-পাইপ ধ্বংস
পরবর্তী নিবন্ধযাত্রীবাহী বাসেই জন্ম নিল কন্যা সন্তান