মানবিক পাস করেই বিমানের পাইলট, সার্টিফিকেটও জাল!

| মঙ্গলবার , ৭ মার্চ, ২০২৩ at ৬:২৭ অপরাহ্ণ

মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করে দেশের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এয়ারক্রাফট ‘পাইলট’ হয়েছেন সাদিয়া ইসলাম।

জানা গেছে, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাকে।

এমন অভিযোগ তুলে তার বিষয়ে তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

সোমবার (৬ মার্চ) এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্স ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন সিদ্দিকুর রহমান। অপর দুই সদস্য হলেন ফ্লাইট সেফটি বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন ইনাম তালুকদার ও ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং তাপস আহমেদ। তাদেরকে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাইলট সাদিয়ার উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ জাল কি না তাও যাচাই করতে বলা হয়েছে তাদের।

মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করে বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এয়ারক্রাফটের পাইলট হয়েছেন, এ দায় ছাড়াও সাদিয়ার বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ থাকায় তদন্ত কমিটিকে তা যাচাই করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের একটি নিয়োগে পাইলটসহ তড়িঘড়ি করে ১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এক বছর পর তাদের মধ্যে পাঁচজন বিমান নিয়ে ওড়ার সুযোগ পান। অন্যান্যরা জাল সার্টিফিকেট, অযোগ্যতা, লাইসেন্সিং পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন।

এই এক বছরে পাইলটদের প্রশিক্ষণ ও বেতন মিলিয়ে বিপুল অর্থ খরচ করে কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থার মধ্যেই সাদিয়া ইসলামের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো।

জানা গেছে, সাদিয়া ইসলাম বিমানের চিফ অভ ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। অভিযোগ আছে, সাজিদের চেষ্টা-তদবিরেই নিয়োগ পান তার স্ত্রী। এমনকি প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়-স্বজনদেরও বিমানে নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন সাজিদ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এম মাহবুব আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, “তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি অভিযোগ সামনে এলে সেটার সত্য-মিথ্যা দেখতে হবে। যেকোনো কিছু হলে তো অভিযুক্তকে সুযোগ দেওয়ারও বিধান আছে।”

প্রতিনিয়ত বিমানের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী আরও বলেন, “সমালোচনার বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবেই দেখা উচিত। দেশবাসীও চায় বিমান ভালো চলুক। যেসব অভিযোগ আসে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থাও নিই।”

সাদিয়া ও তার নিয়োগের ব্যাপারে জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি বিদেশে থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি।

এ ছাড়া তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্স ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তার মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় ১০ মিনিটের ব্যবধানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ