আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে একশ’ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ।
আজ শনিবার(৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় ১১টার দিকে হেরাত প্রদেশের জিন্দা জান জেলায় এ ভূমিকম্প হয় বলে দেশটির দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোল্লা জান সায়েক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। শুরুতে সংবাদমাধ্যমে ১৫ জন নিহতের খবর দেওয়া হলেও ক্রমে তা বাড়তে থাকে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০ জনে পৌঁছেছে এবং এক হাজার জনের বেশি আহত হয়েছেন। অনেক ঘরবাড়ি ধসে গেছে যেগুলোর ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অনেকে আটক পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি প্রদেশটির বৃহত্তম শহর হেরাতের ৪০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে ভূপৃষ্ঠের ১৪ কিলোমিটার গভীরে। মূল ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি পরাঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
ভূমিকম্পে অনেকগুলো ভবন ধসে পড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে জানা গেছে।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, মূল ভূমিকম্পের পর ৫ দশমিক ৫, ৪ দশমিক ৭, ৫ দশমিক ৯ ও ৪ দশমিক ৬ মাত্রার পরাঘাত হয়েছে। এসব পরাঘাত প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলে।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূমিকম্প শুরু হওয়ার পর হেরাতে বাসিন্দারা তড়িঘড়ি বাড়ি ও ভবনগুলো ছেড়ে বের হয়ে আসতে শুরু করে, এ সময় অনেকে হতাহত হন।
ভূমিকম্পে হেরাতের গ্রামীণ ও পার্বত্য এলাকাগুলোতে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে বলে মুখপাত্র জান সায়েক জানিয়েছেন।
ইরানের সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার পূর্বের শহর হেরাতকে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ইউরেশিয়ান ও ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পবর্ত এলাকায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়।
চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জুর্মে ৬ দশমিক ৫ মাত্রার এক ভূমিকম্পে দেশটিতে ও প্রতিবেশী পাকিস্তানে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এর আগে গত বছর জুনে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার এক ভূমিকম্পে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল; ২৫ বছরের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প ছিল এটি।