ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই পৌর বাজারে সিসি ঢালাই দিয়ে ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করেছিল পৌর কর্তৃপক্ষ। গত একবছর আগে একটি গ্যাস কোম্পানির ঠিকাদার গ্যাস লাইন নেয়ার পর সেই ড্রেন ও ফুটপাত ভেঙে পড়ে। এরপর যেনতেনভাবে জোড়াতালি দিয়ে তারা চলে যায়। এর কয়েক দিন পরেই প্রায় কোয়ার্টার কিলোমিটারজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে ধসে পড়ে ড্রেনটি। এ বিষয়ে দৈনিক আজাদীতেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, শীঘ্রই ধসে যাওয়া এই ড্রেনটি যথাশীঘ্রই নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে বছর প্রায় গড়িয়ে যাবার পরও তা এখনো পুনর্নির্মাণ করা হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, মহাসড়কের পূর্বপাশে চট্টগ্রামমুখী লেনে প্রায় ১ বছর আগে গ্যাস পাইপ লাইন বসাতে গিয়ে পথচারী চলাচলের স্ল্যাবগুলো উল্টে পথ ও নিচে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সব খুঁড়ে একাকার করে ফেলে। এরপর তারা কোনোভাবে স্ল্যাবগুলো বসিয়ে চলে যায়। এর দুমাসের মধ্যে বৃষ্টিপাত শুরু হলে ফুটপাত ধসে পড়ে অন্তত প্রায় ৪০০ গজ এলাকা। দিনে দিনে অবশিষ্ট ভালো স্থানটুকুও ধসে ধসে পড়ছে। এতে পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হওয়াসহ জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে বাড়ছে প্রাণের ঝুঁকি।
মীরসরাই থানা মসজিদের মুসল্লি শহিদুল্লাহ মিয়া (৫৫) বলেন, মীরসরাই থানা মসজিদ, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, সেকান্দর হাজী বিল্ডিং ও শাহজালাল ব্যাংকের সামনের অংশ এবং থানার উত্তরপাশে দিয়ে পুরো পাটাতন ধসে পথচারীরা চলাচল করতে পারছে না। আবার ভাঙা অংশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কের ওপর দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। অথচ সদরের এই অংশটিই সবচেয়ে সংকীর্ণ স্থান। আবার অনেক ব্যস্ত এলাকা এটি।
স্থানীয় পথচারী মীর হোসেন (৫৪) বলেন, মীরসরাই কলেজ, পাইলট ও বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ প্রায় লক্ষাধিক প্রায় মানুষের চলাচলের এই মীরসরাই পৌরবাজার অংশে পাইপ লাইন বসাতে গিয়ে প্রায় ১ মাস ধরে মহাসড়ক বন্ধ করার মতো যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, তারা রড দিয়ে পূর্বের মতো মজবুত না করে নিম্ন মানের ইট দিয়ে কোনোভাবে বসিয়ে তারা চলে যায়। যা এখন চলাচলে দুর্ভোগ ও হতাহত হবার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে প্রায় একবছর ধরে। মীরসরাই সদরের আরেক ভুক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমরাও ভোগান্তি থেকে বাঁচতে গ্যাস কোম্পানির লোকজনের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। ওরা বৃষ্টি বন্ধ হলেই কাজ শুরু করবে বললেও প্রায় ১০ মাস চলে গেল এখনো আসেনি।
মীরসরাইয়ের পৌরসভার বর্তমান দায়িত্বরত মেয়র ও এসিল্যান্ড আলাউদ্দিন কাদের বলেন, সরকারি অর্থায়নে সড়কের সিসি ঢালাইয়ের ক্ষতি করা গ্যাস কোম্পানি পুরো ঢালাইয়ের বিভিন্ন ধসে যাওয়া স্থানগুলো ভালোভাবে আবার রিপেয়ারিং করে দেয়ার কথা। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়ে সমাধানের জন্য শীঘ্রই যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
কর্ণফুলি গ্যাসের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার শহিদুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ওই প্রকল্পের উপ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দীপন গ্যাসকে অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ করার তাগাদা দিয়েছি। ওরা জানিয়েছে, শীঘ্রই কাজ শুরু করবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা উক্ত সড়ক স্থানের ড্রেনেজ সংস্কারের বিষয়ে ওদের সাথে আবারো যোগাযোগ করে শীঘ্রই অফিসিয়ালি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।












