জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যা সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে আজ মঙ্গলবার। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে বেলা ১২টায় তা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। গতকাল সোমবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠকে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
সমাপনী বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন গঠনের পর থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত সব নথি ও কাগজপত্র, আলোচনার ভিডিও, অডিও, ছবি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এগুলো মহামূল্যবান সম্পদ। জাতি হিসাবে আমরা কোন প্রেক্ষাপটে কী প্রক্রিয়ায় কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম, তা সকলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং উন্মুক্ত থাকা দরকার। যত বৈঠক হয়েছে সেগুলোর ছবি ও ভিডিও, যত চিঠি চালাচালি হয়েছে –সমস্ত ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে এবং ক্যাটাগরি করে রাখতে হবে। টেলিভিশনে যেসব আলোচনা লাইভ প্রচার হয়েছে সেগুলো খণ্ড খণ্ড আকারে সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ এগুলো হবে ইতিহাসের চির জীবন্ত দলিল। যারা গবেষণা করতে চায় তারা যেন এগুলো দেখে কাজে লাগাতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ডকুমেন্ট থেকে যাবে। এই দলিলগুলোই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। এসময় রাজনৈতিক দল, ঐকমত্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারী, গবেষক ও সংবাদমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
কমিশনের সমাপনী বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি অন্য সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশন সদস্যরা।
ঐকমত্য কমিশন বাংলাদেশে একটি ‘স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনে’ কাজ করেছে তুলে ধরে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি, শিক্ষাবিদসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, চব্বিশে ছাত্র–শ্রমিক–জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে সেটা যেন হারিয়ে না ফেলি। কমিশন সংস্কারকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে জনগণ কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন দেখতে পারে। কমিশন দায়িত্ব শেষ করল। আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর হবে। কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। এরপরেও সরকারের প্রয়োজন হলে এ দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করব।












