পল্টন মডেল থানার পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় পর্ন তারকা যুগলের পাঁচ দিনের রিমান্ড হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানা গতকাল মঙ্গলবার তাদের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রুকনুজ্জামান রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন–মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও বৃষ্টি (২৮)। সম্প্রতি আলোচনায় আসা ‘পর্ন তারকা’ যুগলকে সোমবার ভোররাতে বান্দরবানের হাজীপাড়ার বালাঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পর্ন ভিডিও তৈরির আলামত হিসেবে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, সিমকার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল মঙ্গলবার তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন সিআইডির এসআই মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আসামিরা অশ্লীল ভিডিও নির্মাণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইন্টারনেটসহ অনলাইনে ছেড়ে উঠতি বয়সী তরুণদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। এতে কারো কোন ইন্ধন আছে কি না, থাকলে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য এদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। আসামিদের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
সম্প্রতি একটি পর্ন সাইটে শীর্ষ তারকাদের তালিকায় ওই যুগলের নাম উঠে আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ‘দ্য ডিসেন্ট’। অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বাংলাদেশের আইনে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ না থাকলেও তাদের কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হয়নি।
সিআইডি বলছে, এই যুগল কেবল নিজেরাই পর্ন ভিডিও তৈরিতে সম্পৃক্ত নয়, অন্যদেরও এ জগতে সম্পৃক্ত করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে এক বছরে তাদের প্রকাশিত ১১২টি ভিডিও ২ কোটি ৬৭ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একাধিক আন্তর্জাতিক পর্ন ওয়েবসাইটে তারা ভিডিও আপলোড করতো। এভাবে খোলাখুলি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও তারা প্রচারণা চালাতো। এসব প্রচারণায় ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়ার জন্য অন্যদেরকে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করতো তারা।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বহু ছবি। বিষয়টি সামাজিক ও নৈতিকভাবে উদ্বেগজনক এবং একইসঙ্গে বেআইনি হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন সিআইডির সাইবার তদন্ত বিভাগের ইন্সপেক্টর শামীম হোসেন।










