ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সহজ জয়ে হারানো আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এবার দৃষ্টি সিরিজ জয়ের দিকে। টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশায় প্রলেপ দেওয়াই এখন লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে মাঠে নামার আগের দিন দলকে একটু ভিন্নভাবে প্রস্তুত করলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। গতকাল সোমবার মিরপুরের সেন্টার উইকেটে প্রায় দুই ঘণ্টা দলকে ম্যাচ পরিস্থিতির অনুকরণে অনুশীলন করিয়েছেন সিমন্স। টপ অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার, এমনকি লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদেরও ব্যাটিং অনুশীলন করানো হয়েছে। তাদেরকে বল করেছেন নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলাম ও রিশাদ হোসেন। ব্যাটিং অনুশীলনে বাড়তি জোর দেওয়ার পেছনের কারণও স্পষ্ট। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম চার ব্যাটার, বিশেষ করে দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার ফিরেছিলেন মাত্র ৮ রানের মধ্যে। তাদের আউটের ধরনেই স্পষ্ট হয়ে যায়, মন্থর উইকেটে বলের আচরণ বুঝতে সমস্যা হচ্ছে তাদের। পরে তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্তও একইরকম ভোগান্তিতে পড়েন। ভেতরে ঢোকা বলে পায়ের মুভমেন্ট ঠিক না রেখে খেলতে গিয়ে আউট হন তারা। তাই এদিনের অনুশীলনে মূল ফোকাস ছিল ফুটওয়ার্ক। কিভাবে সামনের পায়ে বা পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলে টার্ন সামলে সিঙ্গেল নেওয়া যায়। কিভাবে মিডল ওভারে স্ট্রাইক রোটেট করা যায়। এসব ভাবনায় নিয়েই অনুশীলন করেছেন ব্যাটসম্যানরা। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদও সেই কথাই বলেছিলেন।
এই স্পিন কোচ বলেন আমরা আসলে চেয়েছিলাম অনুশীলন যেন ম্যাচের মতো পরিবেশে হয়। ব্যাটারদের জন্য খুব দরকার ম্যাচের মতো ‘মাসল মেমোরি’ তৈরি করা। যেন ওরা বুঝতে পারে পরদিন যখন মাঠে নামবে তখন এইরকম পরিস্থিতিই থাকবে। সিমন্স চাচ্ছিলেন ব্যাটারদের শেখাতে কিভাবে মিডল ওভারে সিঙ্গেল নিতে হয়। কিভাবে ঘুরিয়ে খেলা যায়। এজন্য স্পিনারদের ফিল্ড সেট করতেও বলা হয়েছিল। গতকালের অনুশীলনটা তাই অনেকটা ম্যাচসদৃশ ছিল। অনুশীলনে দেখা গেছে, কয়েকজন ব্যাটার ব্যবহার করেছেন ছোট ব্যাট যেটা সাধারণত ‘মঙ্গুজ ব্যাট’ নামে পরিচিত। সেটাও পরিকল্পনার অংশ ছিল জানালেন মুশতাক। এই কোচ বলেন ছোট ব্যাট মানে হচ্ছে, তোমার গ্র্যাভিটি লেভেল নিচে নামানো। স্পিনিং উইকেটে তোমার মাথা বলের খুব কাছে থাকতে হবে। যদি ফুটওয়ার্কে আলসেমি করো, স্পিনার সহজে আউট করে ফেলবে। ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলনের মানে হলো সামনে বা পেছনে খেলো। মাথা যেন সবসময় বলের কাছাকাছি থাকে। যখন ব্যাটাররা এমন ফুটওয়ার্ক ব্যবহার শুরু করে তখন ভালো বলেও তারা সিঙ্গেল নেয়।
আমি জানি, কেউ যদি আমার ভালো বলেও রান নিচ্ছে তাহলে আমি ওকে পরের বলেই কিছু আলাদা দিতে বাধ্য হবো। তাই এই অনুশীলন খুব দরকারি। এই প্রস্তুতির ফল ম্যাচে কতটা পাওয়া যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।












