বিসিবির জন্য একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে এই নির্বাচন

মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর বললেন তামিম ইকবাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ২ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

গতকাল সকাল থেকেই মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম বেশ সরগরম হয়ে উঠে। কারণ একটাই বিসিবির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন তামিম ইকবাল। অতঃপর তিনি এলেন সরে দাঁড়ালেন এবং গেলেন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর তার মনে দানা বেঁধেছে হতাশা ও ক্ষোভের মেঘ। সেই মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরল একটু পরই। পাতানো নির্বাচনের ছক সাজানো হয়েছে অভিযোগ করে সাবেক অধিনায়ক বললেন, বিসিবির জন্য একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে এই নির্বাচন। ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবি পরিচালক পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন তামিম। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্ধারিত দিনে বুধবার তিনি সরে দাঁড়ান নির্বাচন থেকে। নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন আরো ১৪ জন। তামিম পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তুলে ধরেন তার সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ।

তিনি বলেন প্রত্যাহারের কারণটি খুবই পরিষ্কার। এখানে আমার কাছে মনে হয় না যে আমাকে খুব বিস্তারিত বা ব্যাখ্যা করে কোন কিছু বলার আছে। আমি শুরু থেকেই একটা কথা বলে আসছি, নির্বাচনটা কোন দিকে যাচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে। এ জিনিস নিয়ে আপনারা সবাই এখন পরিষ্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলে নির্বাচন না। ক্রিকেটের সাথে এই জিনিসটা কোনো দিক থেকেই মানায় না। যখন ইসি তালিকা দেবে আজকে কারা কারা প্রত্যাহার করেছেন তাদের নামগুলা আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবেন যে সবাই তাদের জায়গা থেকে হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও খুব শক্তিশালী। এটা হলো আমাদের একটা প্রতিবাদের পথ যে, এই নোংরামির অংশ আমরা থাকতে পারব না। এখানে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন সময় অনেক ধরনের কথা বলা হয়েছে, তবে দিন শেষে আমার কাছে মনে হয় যে, এই নোংরামির সাথে আমরা কোনো দিক থেকে কোনভাবেই অংশ নিতে পারব না। তামিমের দাবি, মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে আগ্রহী ছিলেন আরও অনেকে। কিন্তু তাদেরকে নির্বাচনে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে নানাভাবে।

একটা জিনিস আমি সবসময় বলছি বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না। বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকেরাও এটা ডিজার্ভ করে না। জানি না কতজন স্বীকার করবেন বা করবেন না, আরও অনেকেই আজকে নাম প্রত্যাহার করতেন। তাদেরকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন উপায়ে বোঝানো হয়েছে বা চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। কোনোভাবে থামানো হয়েছে। তামিমের মতে, পাতানো নির্বাচনের এই খেলায় ক্রিকেটের পরাজয় হয়েছে। আপনারা জিততেও পারেন, হারতেও পারেন। তবে আজকে ক্রিকেট শতভাগ হেরে গিয়েছে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। আপনারা বড় গলায় যে বলেন বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তাটা করবেন। গত কিছুদিনে তামিম কয়েক দফায় অভিযোগ করেছেন, বিসিবির একটি অংশ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এ দিন তিনি এটা নিয়ে আলাদা করে কিছু না বললেও পরবর্তীতে মুখ খুলবেন বলে জানিয়ে রাখলেন। আমার কাছে মনে হয় যে এটা স্পষ্টভাবে পরিস্কার সবার কাছে, কারা কারা কোন সময়ে, কারা কারা কোন ধরনের সম্পৃক্ততা এখানে রেখেছেন। কী ধরনের হস্তক্ষেপ হয়েছে। নিয়ম ইচ্ছামত, সুবিধামতো যে সময় দরকার ও বদলানো হয়েছে। কারা কারা জড়িত একদম পরিষ্কার। আমি এর চেয়ে বেশি আর কোনো কথা বলব না। তবে ভবিষ্যতে আমি এটা নিয়ে অবশ্যই কথা বলব। এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে গেল। নির্বাচনের অংশ যারা আছেন, আমি নিশ্চিত, তারাও বুঝতে পারেন যে কোনো দিক থেকেই এটা একটা নির্বাচন ছিল না। আমার তরফ থেকে আমার এর চেয়ে বেশি আর কোন বার্তা দেওয়ার নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএনসিএল টি-টোয়েন্টিতে টানা তৃতীয় জয় চট্টগ্রামের
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিমসহ ১৫ জন