জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞ চলে ৪৩৮ স্থানে

ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তা

| বুধবার , ১ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ

জুলাই আন্দোলন দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেছেন, আন্দোলন ঘিরে দেশের ৪৩৮ স্থানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে; মারণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে অর্ধ শতাধিক জেলায়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১ এ গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলমামুনও আসামি। তাদের মধ্যে মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন, যাকে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মো. আলমগীর তৃতীয় দিনের মত সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন। জবানবন্দির একপর্যায়ে তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালে দেশের ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। খবর বিডিনিউজের।

এ সময় ট্রাইব্যুনাল জানতে চায়, জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড বা নৃশংসতা চলল; এসব বন্ধে আসামিরা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন কিনা; আপনি কি তদন্তে পেয়েছেন? জবাবে আলমগীর বলেন, না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডনৃশংসতা বন্ধ করার জন্য আসামিরা কোনো পদক্ষেপ নেননি। একইসঙ্গে যারা হত্যাগুমজখম করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মূলত জুলাই আন্দোলনসহ গত ১৫ বছরে খুনগুম, নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

গতকাল মো. আলমগীরের জবানবন্দি শেষ হয়েছে। তাকে জেরা করার জন্য আগামী সোমবার দিন ঠিক করা হয়েছে বলে জানান কৌঁসুলি ফারুক আহাম্মদ। এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও কৌঁসুলি তানভীর হাসান জোহা। পরে তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসেবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম মামলার বিচার শুরু হয়। আর তা শুরু হয় সেই আদালতে, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য।

জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার শেষ করার দাবি জানিয়ে আসছে। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সমপ্রতি এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলেই এ বিচার শেষ হবে বলে তিনি আশা করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাতুনগঞ্জে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম
পরবর্তী নিবন্ধসাগরে মাছ ধরার সময় আরও ১৪ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি