সব কোচিং সেন্টারকে নিতে হবে ট্রেড লাইসেন্স : মেয়র

চকবাজার এলাকাকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে রূপান্তর করা হবে যত্রতত্র ব্যানার, পোস্টার ও সাইনবোর্ড লাগানো বন্ধের আহ্বান

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ

নগরে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১২০টির ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে, বাকিগুলোর নেই। যাদের লাইসেন্স রয়েছে তাদের মধ্যেও অনেক প্রতিষ্ঠান নবায়ন করছে না। আবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অনুমতি ছাড়াই নগরের বিভিন্ন স্থানে কোচিং সেন্টারগুলোর পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড লাগাচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্যও। এ অবস্থায় ট্রেড লাইসেন্স না থাকা কোচিং সেন্টারগুলোরও ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, যেহেতু কোচিং সেন্টারগুলো একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা খাত, তাই এটি অবশ্যই নৈতিকতা ও নীতিমালার আওতায় আসতে হবে। এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক।

গতকাল বুধবার বিকেলে টাইগারপাস নগর ভবন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা বলেন মেয়র। নগরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে নগরজুড়ে বেআইনি পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন ধরনের ভিজ্যুয়াল দূষণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সভা আয়োজন করে চসিক। সভায় মেয়র বলেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে নিয়মকানুন মানতে হবে। কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যেহেতু তারা ছাত্রদের থেকে ফি আদায় করে। এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা আবশ্যক।

ডা. শাহাদাত বলেন, আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ চকবাজার জোনটিকে একটি ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে রূপান্তর করতে। তাই যত্রতত্র ব্যানারপোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে আমরা ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করব। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে না, একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।

তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া নগর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব থেকে রাস্তা মেরামত, নালাখাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। তাই সবাইকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। যারা এখনো ট্রেড লাইসেন্স করেননি, তারা দ্রুত লাইসেন্স গ্রহণ করবেন এবং যাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়নি তারা নবায়ন করবেন।

নিয়মনীতি মানছে না কোচিং সেন্টারগুলো : সভায় চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়া ব্যানারপোস্টার লাগাচ্ছে এবং এগুলো অপসারণ করছে না। এতে রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি নগরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

চট্টগ্রাম শহরে কোচিং সেন্টারগুলো অন্তত ৮০ ভাগ বিজ্ঞাপনলিফলেট প্রচারের ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিচ্ছে না। নিয়ম মেনে আনুমানিক ২০ ভাগ বিজ্ঞাপন কর্পোরেশনের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। শত শত প্রতিষ্ঠান এ ধরনের অনিয়ম করছে যা নিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা।

সভায় রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুমতিহীন, অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলো যত্রতত্র বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করছে। একটি ব্যানার বা সাইনবোর্ডের জন্য মাত্র একদুই হাজার টাকার কর প্রদানই যথেষ্ট। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরিশোধ করে না। অথচ এই অর্থ দিয়েই সিটি কর্পোরেশন শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ রাখতে কাজ করে। শহরকে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্খিত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, চট্টগ্রাম কোচিং এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ সোহেল, নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের এশিয়া কাপ শুরু আজ
পরবর্তী নিবন্ধপূবালী ব্যাংকে হাসিনার লকার জব্দ