চিটাগং কিংসের কাছে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা দাবি বিসিবির

স্পোর্টস ডেস্ক | শুক্রবার , ১৫ আগস্ট, ২০২৫ at ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ

বিপিএল দল চিটাগং কিংসের কাছে পাওনা অর্থের পরিমাণ নিয়ে টানাপোড়েন ও নানা খবরের ছড়াছড়ির মধ্যে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবি। বিপিএলের তিনটি আসরে বিভিন্ন খাতের পাওনা ও সেসবের দীর্ঘদিনের সুদ মিলিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ মার্কিন ডলার দাবি করেছে বিসিবি। চলতি বাজার দর অনুযায়ী যা প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। বিপিএলের প্রথম দুই আসরে অংশ নেওয়ার পর অনেক অভিযোগ ও বিতর্কের জন্ম দেওয়া এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বাদ দেয় বিসিবি। তবে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পথ ধরে বিসিবিতেও পরিবর্তন আসার পর বিস্ময়করভাবে আবার ফেরানো হয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। প্রথম দুই আসরের সেই পাওনায় অনেক ছাড় দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিল বিসিবি। সমঝোতার সেই অর্থও পরে কমানো হয় আরও। তার পরও সেটি তারা শোধ করেনি বলে খবর ছড়িয়েছিল। বিসিবির ব্যাখ্যায় সেসবই ফুটে উঠল। এছাড়া গত আসরেও ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের অনেকের পারিশ্রমিক সময়মতো না দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল তারা। বিশেষ করে ‘মেন্টর’ হিসেবে নিয়ে আসা সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক শাহিদ খান আফ্রিদির পাওনা পরিশোধ না করার ঘটনায় তুমুল হইচই পড়ে যায়।

বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিপিএলের প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে ক্রমাগতভাবে চুক্তির আইনি ও আর্থিক শর্ত ভঙ্গ করে গেছে চিটাগং কিংসের সত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান এস.কিউ. স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড। ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বিসিবির পক্ষ থেকে অনেকবার তাগাদা ও নোটিশ দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ছিল ২০১৩ সালের ৭ মে সালিশি নোটিশ ও গত ২২ জুলাইয়ের আইনি নোটিশও। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজিটি চুক্তির শর্ত রক্ষা করতে পারেনি। পাওনার মধ্যে আছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর এবং ক্রিকেটারদের ও দল সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ পথে ব্যাপারটি সমাধানের জন্য গত সেপ্টেম্বর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে একটি চুক্তি করে বিসিবি। কিন্তু সেই চুক্তির অর্থ পরিশোধ করতেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এর ফলাফল হিসেবে গত ২২ জুলাই নোটিশ দিয়ে সেই সমঝোতা চুক্তি বাতিল করে দেয় বিসিবি এবং ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ মার্কিন ডলার পাওনা দাবি করা হয়। পাওনা আদায়ে সব আইনি প্রচেষ্টা বিসিবি চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরি সমপ্রতি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ৪৫৪৬ কোটি টাকার ব্যাপারটি কীভাবে এলো এটি তিনি বুঝতে পারছেন না। বিসিবির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেই দাবিকৃত অর্থের ব্যাখ্যাও দিয়েছে। প্রথম দুই আসরের পাওনার সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ২০১২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সুদের অর্থ। এছাড়াও প্রথম দুই আসরের পাওনা ছিল মার্কিন ডলারে। ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অনেক পতন হয়েছে গত ১৩ বছরে। সেটির সমন্বয় করেই গত ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর এবং ক্রিকেটারদের ও দল সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক মিলিয়ে মোট ওই উল্লিখিত অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয়েছে। পাওনা অর্থে পরিমাণ আলাদা করেও তুলে ধরেছে বিসিবি। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে বোর্ডের মূল পাওনা ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৫ মার্কিন ডলার। আর ১৩ বছরের মোট সুদ ২২ লাখ ৩২ হাজার ৯২ ডলার। আবারও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২২ জুলাইয়ের নোটিশ অনুযায়ী সাড়ে তিন কোটি টাকায় সমঝোতার সেই চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে ‘ব্যাটল অব চ্যাম্পিয়নস’র পুরস্কার বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধবড় হার দিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু বাংলাদেশ ‘এ’ দলের