ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। এজন্য আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। গতকাল রোববার নগরীর সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন–শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সভায় জেলা ও মহানগর এলাকার আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিভিন্ন থানায় লুণ্ঠিত অবৈধ অস্ত্র পুনরুদ্ধার, পূর্বে ইস্যুকৃত অস্ত্রের বৈধতা যাচাই, অযোগ্য ব্যক্তির লাইসেন্স বাতিল এবং সব ধরনের অস্ত্রের ওপর গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে মামলা নিষ্পত্তি ব্যাহত হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদকে আরও সক্রিয় করে জনসেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও রেলপথে মাদক চোরাচালান রোধে টাস্কফোর্স অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিশোর অপরাধ ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, অনিবন্ধিত সিএনজি শনাক্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ, চিহ্নিত স্থানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া উচ্ছেদ অভিযান, বালি উত্তোলন বন্ধ, পাহাড় কাটা রোধ, খুন–ডাকাতি–চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, রেল ও সড়কপথে মাদক পাচার প্রতিরোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ এবং জানমাল রক্ষায় সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। যানজট নিরসনে ফুটপাত দখল করে দোকান স্থাপন বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কৃষি খাতে ব্লক সুপারভাইজারদের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়, যাতে সার ও বীজ বিতরণ এবং কৃষি পরামর্শে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে কৃষকদের ক্ষতি রোধ করা যায়।
রাউজানসহ জেলার সকল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জন্মাষ্টমী ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন এবং অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অভিযান পরিচালনারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জেলা ও মহানগরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।