বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসকে পৃথক দুটি মামলায় (রাষ্ট্রদ্রোহ ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলা) জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) মো. মাহফুজুর রহমান আদালতের কাছে এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি আবেদন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও আদালত এলাকায় নৃশংসভাবে খুন হওয়া আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময়কে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাশের বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। এ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে সেদিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে, তখন আগে থেকে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করেন এবং ভ্যানের সামনে–পিছে শুয়ে পড়েন। আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এরই মধ্যে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে মেথরপট্টি এলাকায় খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এসব ঘটনায় সাতটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা হয়।
পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে পৃথক তিনটি, আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই খানে আলম বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা করেন। এছাড়া মো. এনামুল হক নামে একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে আরো একটি মামলা করেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।