চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আনারস বাগান করে সফলতা

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই | রবিবার , ৯ মার্চ, ২০২৫ at ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ৫৯ বছর সরকারি চাকরি করার পর ২০২৩ সালে অবসরে যান কালিময় তনচংগ্যা (৬১)। অবসরে যাবার পর অবহেলায় সময় নষ্ট না করে তিনি কৃষি কাজ করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কালিময় তনচংগ্যা কামিলাছড়ি এলাকায় প্রায় ১০ একর পাহাড়ে আনারস বাগান করেন। এক বছর আগে সৃজন করা এই বাগানে প্রায় ৩০ হাজার আনারস গাছ রয়েছে। দেশীয় আনারসের পাশাপাশি তিনি মালয়েশিয়ান আনারসের বাগানও সৃজন করেছেন। তাঁর বাগানের প্রতিটি গাছে আনারস ধরে আছে।

ইতোমধ্যে বাগান থেকে আনারস সংগ্রহ করে বিপুল পরিমাণ বিক্রিও করেছেন।

প্রায় ২০ হাজার আনারস বিক্রি করেছেন। আরো প্রায় ২০ হাজার আনারস বাগানে রয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় আরো বেশি পরিমাণ পাহাড়কে আনারস চাষের উপযোগী করে তৈরি করছেন কালিময় তনচংগ্যা। কাপ্তাই উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার কামিলাছড়ি এলাকায় আনারসের বাগান করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি এই কর্মচারী।

সরেজমিন আনারস বাগান পরিদর্শনে দেখা গেছে পাহাড়ে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে রসে ভরা আনারস। বেশিরভাগ আনারসে রং ধরেছে। কিছু আনারস এখনো পরিপক্ক হয়নি। খুব মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই বাগান থেকে আনারস কিনতে বারবার কালিময় তনচংগ্যার কাছে ফোন করছেন। কালিময় তনচংগ্যা বলেন, প্রথমবারের মত আনারস বাগান করে আমি সফলতা পেয়েছি। আগামী বছর বাড়তি আরো ৫ একর পাহাড় জুড়ে আনারসের বাগান সৃজন করবেন বলেও তিনি জানান। শুধু আনারস নয় কালিময় তনচংগ্যার বাগানে আম, লিচু, পেঁপে, কাগুজি লেবু ইত্যাদি ফল গাছেরও ব্যাপক সমাহার দেখা গেছে। এসব গাছেও ফল আসতে শুরু করেছে। এসব ফলন থেকেও তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।

কালিময় তনচংগ্যা জানান, দীর্ঘ ১৮ বছর কাপ্তাই উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। কর্মরত অবস্থায়ও তিনি পাহাড়ে আদা চাষ করেছিলেন। আদা চাষ করে তিনি স্বর্ণপদক পেয়েছেন বলেও জানান।

কালিময় তনচংগ্যা ২০২৩ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। অবসর সময় অলস বসে না থেকে নিজস্ব পাহাড়ে তিনি আনারস বাগান সৃজন শুরু করেন বলে জানান। আনারসের বাগান থেকে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই সফলতা পেতে শুরু করেন। তবে আনারস বাগানের পাশাপাশি তিনি একটি মুরগির খামারও করেছেন। তার খামারে কয়েক হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির খামার সংলগ্নে একটি পুকুরে মাছের চাষও তিনি শুরু করেছেন। রুই কাতালসহ বিভিন্ন জাতের কয়েক হাজার মাছের পোনা পুকুরে অবমুক্ত করেছেন। আগামী মে মাসে কাপ্তাই লেক থেকে মাছ ধরা বন্ধ হলে তিনি পুকুর থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করবেন বলে জানান। মাছের খামার থেকেও ভালো আয় করার প্রত্যাশা করেন কালিময় তনচংগ্যা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প চালুর দাবি
পরবর্তী নিবন্ধউচ্চবিত্তদের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে