ইসিকে সহায়তার আশ্বাস, সংস্কারে জোর ইইউর : সিইসি

| বুধবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। সেই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সংস্কারের বিষয়ে জোর দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি। নির্বাচন ভবনে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসিইসি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, নির্বাচনের পথে যত ধরনের সহায়তা দরকার তারা নিশ্চিত করেছে। টাইমটা একটু কম হয়ে যাচ্ছে বলে (ইইউ) মনে করছে রিফর্মের জন্য; উনারা রিফর্মের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ভোট কবে হবে সেভাবে আলোচনা হয়নি। উনারা তো জানেনহয় ডিসেম্বর, বেশি রিফর্ম হলে আগামী বছরের শুরুতে। আমি তো এর বাইরে কিছু বলতে পারবো না। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও সফররত গণতন্ত্র বিশেষজ্ঞ মিট ব্যাকেন ও মাইকেল লিডর। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিলনির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ, গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার ও অগ্রাধিকার, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, নির্বাচনী সময়সীমা, নির্বাচনী প্রশাসন, ভোটার নিবন্ধন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, নির্বাচনী প্রযুক্তি, প্রচার ও ব্যয়, দেশিবিদেশি পর্যবেক্ষক ও সহায়তা। বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসলে জানতে চেয়েছেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য যে নির্বাচনটা হবে তার জন্য নির্বাচন কমিশন কতটুকু প্রস্তুত। কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটার নিবন্ধন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়ার জন্য কত সময় লাগবেএসব জানতে চেয়েছেন তারা।

নাসির উদ্দিন বলেন, (প্রতিনিধিরা) পাশাপাশি বলেছেন, বাংলাদেশে এ অগ্রযাত্রায় উনারা সাহায্য করতে প্রস্তুত; সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। উনারা চান যে একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন হোক এবং এটা হলে এটার পথে যত ধরনের সহায়তা দরকার তারা নিশ্চিত করেছে সহায়তা করবে, তারা আমাদের সাথে থাকবেন এ প্রক্রিয়ায়।

নির্বাচন কমিশনের সহায়তা কোথায় লাগবে, কী ধরনের সহায়তার প্রয়োজন তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি এসে যাচাই করবেন বলে তুলে ধরে সিইসি। আমাদের কোথায় কোথায় সহায়তা দরকার তার নিড অ্যাসেসমেন্টট করতে লোক পাঠাবেন। কোথায় সাহায্য করতে পারে, দেখবেন। তারপর জানাবেন। উনাদের মিশন আসবে। তারপর নির্বাচন হলে অবজারভার পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা অনুরোধ করলে তারা প্রতিনিধি পাঠাবেন।

আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করার বিষয়িটি তুলে ধরেছেন সিইসি। তিনি বলেন, (আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করার বিষয়ে) আমরা একদম আশ্বস্ত করেছি। কারণ, আমরা তো সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি টু এনশিউর ফ্রি, অ্যান্ড ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশনের জন্য। আমরা বলেছি, আমাদের যে কমিটমেন্ট ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন, এটাকে অ্যাচিভ করার জন্য, ডেলিভার করার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আগাচ্ছি। তারা খুশি হয়েছে। আমরা যে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি এটা উনারা অ্যাসেস করতে পেরেছেন, রিয়েলাইজ করতে পেরেছেন।

নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়টি তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার বিষয়ে জোর দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, আমাদের ওপিনিয়ন দিয়েছি। একটা বিষয় আমি এমফেসাইজ করেছিআপনাদেরও বলেছি। ইসির যে স্বাধীনতা যেটা সংবিধান দিয়েছে, সেটা যেনো গ্র্যান্টেড থাকে, সেটা জানিয়েছি, এটা বটম লাইন। কোনোভাবে ইসির স্বাধীনতা কমপ্রমাইজ হোকএটা আমরা চাই না। তারাও জানিয়েছে, এটা তারা অ্যাপ্রেশিয়েট করেছে, তারা বিশ্বাস করেন ইসির স্বাধীন থাকতে হবে। তা না হলে জাতি ইসির কাছে যা প্রত্যাশা করেছে তা ডেলিভার করতে পারবে না।

ইউরোপীয় ইউনিয়েনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সিইসির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আমাদের মধ্যে চমৎকার আলোচনা হয়েছে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে। আমি এখানে সহায়তার বার্তা নিয়ে এসেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী স্বচ্ছ নির্বাচন, ইসিকে কী সহায়তা করতে পারে ইইউ, সিইসির কাছে সেটাও জানতে চেয়েছি বাংলাদেশের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিল থেকে গরুর বাছুর ধরে সিএনজিতে পালানোর চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধনিলামে উঠল ফেব্রিক্সসহ ৮৩ লট পণ্য