টানা ৫ জয়ে রংপুরের কাতারে বরিশাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

আগের ম্যাচ জিতেই শেষ চার নিশ্চিত করে ফেলেছিল চ্যাম্পিয়ন বরিশাল। গতকাল টানা ৫ ম্যাচে জয় তুলে নিল তামিমের দর। ফলে পয়েন্ট তালিকায় রংপুর রাইডার্সের কাতারে এসে গেল বরিশাল। দশ ম্যাচ শেষে দু দলেরই পয়েন্ট ১৮। তবে রান রেটে এগিয়ে থাকায় প্রথম স্থানে রংপুর। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বিপিএলে খুলনা টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টানা পঞ্চম জয়ের দেখা পেল ফরচুন বরিশাল। খুলনা ২০ ওভারে তোলে ১৮৭ রান। বরিশাল জয় পায় ৫ বল বাকি থাকতে। দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানশিপের প্রদর্শনী মেলে ধরে ৩৭ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন ডেভিড মালান। কমবেশি অবদান রাখেন দলের সব ব্যাটসম্যানই। খুলনার এটি ১০ ম্যাচে ষষ্ঠ হার। প্লেঅফ খেলা আরেকটু কঠিন হয়ে উঠল তাদের জন্য। টস হেরে ব্যাট করতে নামা খুলনা ম্যাচের প্রথম তিন ওভারে ১৬ রান তোলে । মেহেদী হাসান মিরাজের ঝড়ে পরের তিন ওভারে আসে ৪০ রান। চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ নাবিকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন মিরাজ। পরের ওভারে টানা দুই বলে বিশাল দুটি ছক্কা মারেন তিনি ফাহিম আশরাফকে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে মিরাজকে থামান ইবাদত হোসেন চৌধুরী। ১৮ বলে ২৯ রান করেন মিরাজ। খুলনা অধিনায়কের পায়ে লেগে বল ছোবল দেয় স্টাম্পে। পায়ে আঘাত পেয়ে তিনি মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে। এরপর আলেক্স রস এসে যোগ দেন নাঈমের সাথে। ২০ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২৭ বলে ৫১ রান করে ফিরেন নাঈম। খুলনার রানের গতিও একটু কমে আসে পরের চার ওভারে। আর তখনই মোহাম্মদ নবির বলে বোল্ড হয়ে যান ১৫ বলে ২০ করা রস। এরপর আফিফ হোসেন শুরুটা করেন মন্থর। ১৪ বলে তার রান ছিল ৯। পরে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি রিশাদ হোসেন ও ইবাদতকে দুটি ছক্কা মেরে। তবে আগের বহুবারের মতো একবার ব্যর্থ হন ইনিংসকে পূর্ণতা দিতে ২৭ বলে ৩২ রান করে ফিরেছেন। ১০ ওভারে যে দলের রান ছিল ১০২, পরের ৭ ওভারে তারা যোগ করতে পারে কেবল আর ৪৮ রান। দুইশর পথে থাকা দলের তখন ১৮০ হওয়া নিয়েই শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত শেষ তিন ওভারে ৩৭ রান তুলতে পারে তারা মূলত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের সৌজন্যে। স্লগ ওভারে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এবারে বিপিএলে নিজেকে নতুন করে তুলে ধরা এই ব্যাটসম্যান খেলেন আরেকটি কার্যকর ইনিংস। শেষ ওভারে প্রথম দুই বলে ছক্কার পর টানা তিন বলে রান নিতে পারেননি মাহিদুল। তার পরও অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ২৭ রান করে। উইলিয়াম বোসিস্টো ১৬ বলে করেন ২০।

রান তাড়া করতে নেমে এ ম্যাচেও ব্যর্থ হলেন তাওহিদ হৃদয়। একটি করে চার ও ছক্কায় ১১ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস। সেই ধাক্কা বরিশাল সামাল দেয় মালানের দারুণ ব্যাটিংয়ে। তামিম ও মালান ৯১ রানের জুটি গড়েন। হাসান মাহমুদকে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন মালান ৩১ বলে। তামিম ১৮ রানে জীবন পান নাঈম সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়ায়। তার পর সালমান ইরশাদকে একটি ছক্কা মারলেও আর গতি পাননি। বরিশাল অধিনায়ক আউট হন ২৫ বলে ২৭ রান করে। সালমান ইরশাদের বলে সীমানায় দারুণ ক্যাচ নিয়ে তামিমকে ফেরান আফিফ। এরপর বল হাতে মালানকে ফিরিয়ে তিনি ম্যাচে ফেরান খুলনাকে। তামিমমালানের বিদায়ের পর বরিশালকে পথে রাখেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক ক্রিজে যাওয়ার পরপরই ছক্কা মারেন আফিফ হোসেন ও নাসুম আহমেদকে। প্রথম বলে বাউন্ডারিতে শুরু করে মাহমুদউল্লাহও ছুটতে থাকেন দ্রুততায়। তিন বলের মধ্যে দুটি ছক্কা মারেন তিনি মোহাম্মদ নাওয়াজকে। তবে দুজনের কেউই কাজ শেষ করতে পারেননি। বদলি ফিল্ডার মাহমুদুল হাসান জয়ের সরাসরি থ্রো থামায় ১৩ বলে ২৪ রান করা মাহমুদউল্লাহকে। পায়ে টান লাগায় তখন মাঠ ছেড়ে যান বোলার সালমান ইরশাদ। ওভারটি শেষ করার দায়িত্ব পান আবু হায়দার। তার প্রথম বলে শর্ট কাভারে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ২৪ রান করা মুশফিক। টানা দুই বলে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে কাজ বেশ কঠিন হয়ে যায় বরিশালের। ৩.৩ ওভারে তখন তাদের প্রয়োজন ৩৬ রানের। তবে ফাহিম আশরাফ ক্রিজে গিয়েই চার ও ছক্কা মেরে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন। পরের ওভারে হাসান মাহমুদের বলে নাবির বিশাল ছক্কায় ম্যাচ চলে আসে নাগালে। ৬ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিম, ১০ বলে ১৫ রান করে নবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএপেক্স গল্ফ টুর্নামেন্ট সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তসলিম হাসানের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা