চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেছেন, দেশের অর্থনীতির দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন যে, গার্মেন্টস ও রেমিটেন্সই দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। প্রবাসী কর্তৃক প্রেরিত রেমিটেন্স দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম পন্থা। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দিন দিন দেশের অর্থনীতিকে আরো অধিকতর শক্তিশালী করছে। তাই দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম। দেশে ও বিদেশে কোনো প্রবাসী যাতে কোন রকম হয়রানির শিকার না হন, কিভাবে তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে আমাদেরকে আরো সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে নগরীর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস আয়োজিত আলোচনা সভা ও চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী মেধাবী সন্তানের হাতে শিক্ষাবৃত্তির চেক প্রদান, জেলার সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে নগরীর আগ্রাবাদস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস সংলগ্ন মাঠে ১৫টি স্টলের মাধ্যমে দিনব্যাপী জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমাদের সবার’। এ উপলক্ষে আলোচনা সভার পূর্বে সার্কিট হাউজ চত্বর থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এক র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভাগীয় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, বাংলাদেশ কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শিক্ষনবিশি প্রশিক্ষণ দপ্তর, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, ওয়েল ফেয়ার সেন্টার, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত অংশ নেন। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমার সভাপতিত্বে ও শাহ আমানত বিমান বন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেঙের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, বিকেটিটিসির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী পলাশ কুমার বড়ুয়া, মহিলা টিটিসির অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আশরিফা তানজীম। এসময় প্রবাসী কল্যান ব্যাংক, সরকারি– বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত সর্বমোট ১১ লাখ ১৯ হাজার ৯৫১ জন বাংলাদেশীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বিএমইটি তথা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান দ্বিতীয় এবং চট্টগ্রাম জেলার প্রায় ১৫ লাখ অভিবাসী কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছে। পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৭৮৫ জন পুরুষ ও ৩৫৭ জন মহিলাসহ মোট ৩৮ হাজার ১৪২ জন কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে রেমিটেন্স প্রেরণের ক্ষেত্রেও চট্টগ্রাম জেলা দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। চলতি সালের গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এ জেলায় প্রেরিত রেমিটেন্সের পরিমাণ সর্বমোট ৯১২.৭ মিলিয়ন ইউ এস ডলার। ৬১ হাজার ২শ ৪৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীর নাম কেন্দ্রীয় ডাটা ব্যাংকে নিবন্ধন এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলায় বিকেটিটিসি, মহিলা টিটিসি, টিটিসি রাউজান ও সন্ধীপ অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীদের প্রাক–বহির্গমন প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।