বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে প্রথম সংস্কার করেছেন বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান। এটি ছিল প্রথম সংস্কার বাংলাদেশের। ‘সংস্কার সংস্কার’ যারা বলে তারা এগুলো বুঝে নাই, চিন্তাও করে নাই। দ্বিতীয় সংস্কার হলো সরকারচালিত অর্থনীতি। যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বাকশালরা লুটপাট করে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল। সেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৃতীয় সংস্কার করেছিলেন মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে।
গত সোমবার দুপুরে নগরের বিপ্লব উদ্যানে বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বিজয় র্যালি–পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সমাবেশ শেষে আমীর খসরুর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের হয়ে দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, কাজির দেউড়ি মোড় হয়ে নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় মঞ্চে এসে শেষ হয়।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের স্বৈরাচারের পতনের পরে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিল বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সমস্ত সংস্কারের মাধ্যমে আজকে যে অর্থনীতি দাঁড়িয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপির অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে। আজও বাংলাদেশ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, আগামী দিনের সংস্কারের কথা যদি বলা হয়, আমরা যে ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি, প্রতিজ্ঞা করেছি, বিএনপিসহ প্রায় ৫০টি দলের ঐকমত্যে আমরা আমাদের ৩১ দফার সংস্কার পরিপূর্ণভাবে পালন করব।
খসরু বলেন, এখন কী সংস্কার হবে না হবে আমরা সেটায় সহযোগিতা করতে রাজি আছি। এটা যাদের কাজ, সেটা হচ্ছে আগামী সংসদের কাজ। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের কাজ। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, যেভাবে বিগত দিনে নিয়েছে। বিগত দিনের রাজনীতিবিদরা যেহেতু সফল হয়নি, তার জন্য রাজনীতিবিদরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। রাজনীতিবিদরা তার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আগামী দিনের রাজনৈতিক পথ সঠিক পথে চালাবে। সেটাই গণতন্ত্র। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আজকের এই দিনে চট্টগ্রামের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিপ্লব উদ্যান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। প্রধান এবং প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। এই চট্টগ্রাম থেকে, চট্টগ্রাম রেডিও স্টেশন থেকে প্রথম জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। আজকের স্বাধীনতা পাওয়ার পেছনে যুদ্ধের যে প্রেরণা, স্বাধীনতা যুদ্ধের যে প্রেরণা, সেটা চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে এবং এ অঞ্চল থেকে শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের।
খসরু বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমরা এখনো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। অথচ স্বাধীনতার পর যখন বাকশাল হয়, এই বাকশালের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের মুখ বন্ধ ঘোষণা করে দেয়, সমস্ত সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রিত করে এবং মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের লক্ষ মানুষের ওপর গুম, খুন, নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়। সেখান থেকে আবারো মুক্ত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, শামসুল আলম ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রাম কিংবা দেশ গঠনে জিয়া পরিবারের অবদান অপরিসীম।
মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যেতে নয়, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় করতে চায়।