সাড়ে তিন হাজার জনবল নিয়োগে ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এ মাসেই

পাঁচটি বিসিএসের মাধ্যমে ১৮,১৪৯ জনকে নিয়োগ দেবে সরকার

| সোমবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

সাড়ে তিন হাজারের বেশি পদে জনবল নিয়োগে চলতি মাসেই ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। গতকাল রোববার বিকালে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বলেন, এ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আমরা প্রস্তুত। চলতি মাসেই ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চেষ্টা করছে কমিশন। এ বিসিএসের সাড়ে তিন হাজারের বেশি পদে নিয়োগ হবে। এগুলোর মধ্যে ৩ হাজার ৪৬০টি ক্যাডার পদ আর দুই শতাধিক ননক্যাডার পদ। খবর বিডিনিউজের।

গত কয়েকবছর ধরে ৩০ নভেম্বর বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে পিএসসি। ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর, ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর এবং ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল।

ওই রেওয়াজ ধরে রেখে ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে এস এম মতিউর রহমান বলেন, আগের কমিশন প্রতিবছরের ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকে ইনোভেশন হিসেবে ধরেছিল। কিন্তু বর্তমান কমিশন সেটিকে ওইভাবে দেখছে না। আমার কাজ করছি, ৩০ নভেম্বরের আগেও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে। কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সুনির্দিষ্ট সময় এখনও জানায়নি, আমরা প্রস্তুত আছি। কমিশনের সায় পেলে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হবে। কমিশন সিদ্ধান্ত দিলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও যেতে পারে। তবে আমাদের টার্গেট নভেম্বর মাসেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের।

এর আগে গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ৪৩তম বিসিএস থেকে শুরু করে আসন্ন ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ‘দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে ১৮ হাজার ১৫০ জন’ চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়ার রূপরেখা দেন জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। শিগগিরই ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩ হাজার ৪৮৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। সবশেষ যে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার আসছে, সেখানে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেছি আমরা।

সচিব বলেন, ক্যাডার পদে ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৬৪ জন, ৪৪তম বিসিএসে ১ হাজার ৭১০ জন, ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ জন, ৪৬তম বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০ এবং ৪৭তম বিসিএসে ৩ হাজার ৪৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া ননক্যাডার পদে ৪৩তম বিসিএস থেকে ৬৪২ জন, ৪৪তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৯১ জন, ৪৫তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৫৭০, ৪৬তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ১১১ জন, ৪৭তম বিসিএস থেকে ৩২৫ জনসহ ক্যাডার ও ননক্যাডার পদে মোট ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, প্রশাসনে ১৫ বছরের একটা জঞ্জাল ছিল, সে কারণে অর্ন্তর্বর্‌তী সরকার আসার পর প্রথম দিকে প্রশাসনে স্থবিরতা দেখা দেয়, যা এখন অনেকটাই কেটে গেছে।

গত ১৫ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৬৪ জনের নিয়োগের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। গেজেটভুক্ত প্রার্থীরা আগামী ১ জানুয়ারি যোগ দেবেন। গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের সময় ৪৪তম বিসিএস এর মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। ওই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৩২ জন। এরমধ্যে ৩ হাজার ৯৩০ জনের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গত ২৫ অগাস্ট ওই মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সমপ্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর ‘অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে’ আগে নেওয়া ৩ হাজার ৯৩০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এখন ৪৪তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীর, অর্থাৎ ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নতুন করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২ হাজার ৭৮৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। প্রথম পরীক্ষকের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়নের কাজ শেষের পথে ছিল।

সমপ্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর উত্তরপত্র মূল্যায়নে ‘স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে’ এ লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়। আর ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। তাতে ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।

সম্ভাব্য বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে’ নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে সমান সংখ্যক, অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৩৮ জনকে যোগ করে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগর উন্নয়নে চসিক-সিডিএ একসাথে কাজ করবে
পরবর্তী নিবন্ধব্যাটারি রিকশা : হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার