বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স মাত্র এক মাস। আপনারা সরকারকে সংস্কারের জন্য সময় দিন। সরকার মানুষের আস্থা ফেরাবে। এমন একটা স্বাস্থ্য কাঠামো দাঁড় করাবে যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সাধারণ মানুষ এক জায়গা থেকে চিকিৎসা নিবে। গতকাল সোমবার বিকেলে খাগড়াছড়ি টাউন হলে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ৫ই আগস্টের পর থেকে আমাদের নতুন একটা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। একটা সিস্টেমের যে মনিব (শেখ হাসিনা) ছিল তাকে আমরা সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি। মনিবের যারা দাস ছিল তারা আমাদের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাংলাদেশ পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে সংগ্রাম জারি রাখতে হবে। গত ১৬ বছরে দেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এ সময়ে আমাদের বিভাজন করে রাখা হয়েছে। আমরা বিভক্ত ছিলাম। বিভাজনে রেখে, আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেয়েছে। শাসক সব সময় সাম্প্রদায়িক বিভাজনে ইন্ধন দেয়।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বন্যার সময় আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংকট মোকাবেলা করেছি। আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো প্রশাসনের কাঠামোতে রয়ে গেছে। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব আপনারা ক্ষমতামুখী না হয়ে জনতামুখী হবেন। আপনারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকবেন। সেনাবাহিনী ৫ই্ আগস্ট জনগণের পাশে ছিল, মানুষ তা আজীবন মনে রাখবে। আপনারা যদি ক্ষমতামুখী হন তাহলে আপনারা বেনজীর কথা মনে রাখবেন, ডিবি হারুনের কথা মনে রাখবেন। আমরা দেখছি প্রশাসনের অনেকের মধ্যে অনীহা কাজ করছে। অতীতে সরকার পদবী, প্রমোশনের লোভে আপনাদের নাগরিক বাহিনীর পরিবর্তে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে। ভূমি অফিস, পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেবামূলক দপ্তরে ঘুষ বন্ধ হওয়ায় অনেক কর্মচারী কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছে। আমি তাদেরকে জনবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা দিতে না পারলে ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের আমরা প্রত্যাহার করে নিব। খুনি হাসিনাকে যেভাবে জনতা রিপ্লেসমেন্ট করেছে আপনাদেরও সেভাবে রিপ্লেসমেন্ট করা হবে। সরকারি চাকরিতে যারা আছেন তারা যদি জনগণকে সেবা দিতে না পারেন তাহলে চাকরি ছেড়ে আপনারা কৃষি কাজ করুন।
তিনি আরো বলেন, সরকার এতো দিন বলেছিল চারদিকে উন্নয়ন আর উন্নয়ন। কিন্তু সরকার চলে যাওয়ার পর দেখছি দেশের অর্থনীতি একেবারেই ভঙ্গুর। সমাজের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি হয়নি। আন্দোলন পরবর্তী সময়েও কেউ আমাদেরকে বিভাজন করতে পারবে না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ নতুন রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। আমরা ছাত্র জনতা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি সহ্য করবো না।