বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ ও আহতদের সুস্থতা কামনায় সৌদি আরবে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা থেকে গ্রেপ্তার চট্টগ্রামের ৮ প্রবাসীর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে গ্রেপ্তারদের স্বজনরা। গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, গত ১৬ অগাস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা আয়োজন করেছিলেন সৌদি আরবের আবহা ও মাহাইল প্রবাসীরা। সেদিন সেখানে বহু বাংলাদেশি প্রবাসী জড়ো হয়েছিলেন। পরে সেখানে ‘আইন অমান্যের’ অভিযোগ তোলে ৮ বাংলাদেশি প্রবাসীকে ধরে নিয়ে যায় সৌদি পুলিশ। তারা সবাই চট্টগ্রামের।
মানববন্ধনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের স্ত্রী, মা, সন্তান স্বজনসহ বেশ কিছু প্রবাসীও অংশ নেন। তারা বলেন, স্বজনেরা সৌদি আরবের কারাগারে, আমরা বেঁচে থেকেও মরে গেছি। আমাদের এখন দেখার কেউ নেই। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে যন্ত্রণায়।
গ্রেপ্তার আট প্রবাসী হলেন বাঁশখালীর জয়নুল আবেদীন, রহমত উল্লাহ, খলিলুর রহমান ও ওমর ফারুক, সাতকানিয়ার সামিউল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম উল ইসলাম ও বান্দরবানের মো. আশরাফুল ইসলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন পরিবারসহ সৌদি আরবে আছেন।
গ্রেপ্তার প্রবাসী জয়নুল আবেদীনের বাবা নুরুল আমিন বলেন, আমার ছেলে ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে আছে। আমাদের পরিবারের একমাত্র উপর্জনাক্ষম ব্যক্তি সে। এখন সে ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ আর আহতদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে সৌদি আরবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের আকুল আবেদন–আমাদের স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন। আরব আমিরাতে যারা আটক হয়েছেন সরকার তাদের ছাড়িয়ে আনতে সহযোগিতা করেছেন। এই ব্যাপারেও সহযোগিতা করুন। গ্রেপ্তার প্রবাসীর স্বজনেরা বলেন, গ্রেপ্তাররা আমাদের কারও ভাই, কারও স্বামী, কারও বাবা। প্রবাসে থেকে তারা সর্বাত্মকভাবে ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রজনতাকে সমর্থন দিয়েছেন।
ছাত্র–জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে তারা সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ রেখেছিলেন। ছাত্র–জনতার চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর দেশ গঠনে তারা আবারও রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে শুরু করেন।
আমরা পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয়স্বজন আর্থিকভাবে প্রবাসী সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল। পরিবারের উপার্জনাক্ষম সদস্যের গ্রেপ্তারের ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।