নিজস্ব সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরেই বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে : জামায়াতের আমীর

| রবিবার , ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিশ্বাসের প্রকাশ হচ্ছে সংস্কৃতি। অতএব সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে বিশ্বাস নয়; আবার আমার বিশ্বাসকে দূরে রেখে সংস্কৃতি নয়। যারা নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতি ভুলে অন্যেরটা অনুসরণ করে তারা কোনো সময় অগ্রসর হতে পারে না। আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন জাতি হতে পারে না এবং তারা দেশ জাতিকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়। তাই আমাদের নিজস্ব বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও শিকড়কে আঁকড়ে ধরে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট আয়োজিত কবি, লেখক ও শিল্পী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। কবি মোশাররফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্টের সেক্রেটারি মাহবুব মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও মুহা. কামাল হোসাইন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে আমাদের বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই আমাদের সংস্কৃতি আবর্তিত। আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের উন্মুক্ত আবাসভূমি। একটি বৈচিত্র্যময় মেলবন্ধন এদেশে রয়েছে। এখানে আমরা সবাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বিগত ছাত্র জনতার আন্দোলনেও আমরা দেখেছি কোনো দুষ্টচক্র এই সম্প্রীতির বন্ধনকে নষ্ট করেতে না পারে সেজন্য দেশের সব মন্দির, চার্চ, গির্জাগুলো মাদরাসার ছাত্ররা দিনরাত পাহারা দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে। কিছু দুষ্কৃতকারী অপরাধ সংঘটিত করে বৃহৎ গোষ্ঠীর ওপর দোষ চাপিয়ে দিতে চায়, সেই সব সন্ত্রাসীদের মোকাবিলায় সংস্কৃতিকভাবে আমাদেরকে দৃঢ়তা প্রদর্শন করে সবার অন্তরে স্থান করে নিতে হবে। সম্প্রতি আমরা সকল ধর্মের মানুষের সাথে মতবিনিময় করেছি। আমরা বলেছি, আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশি, সকলে মিলে সুখে শান্তিতে আমরা বাংলাদেশে বসবাস করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, কবি, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকদের বলা হয় জাতির জাগ্রত বিবেক। আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। অথচ, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের অধিকাংশ মানুষই ইসলামী আদর্শ ও মুসলিম চেতনা লালন করে জীবনযাপনে অভ্যস্ত। ফলে এদেশের মানুষের কাছ থেকে ইসলামী বিশ্বাসের চিন্তা ভুলিয়ে দেওয়া সহজ নয়। ইসলামের শিকড় এদেশের মানুষের অনেক গভীরে মিশে আছে। বাংলাদেশের সবুজ জমিনে ইসলাম হাজার বছরের বটবৃক্ষ হয়ে অবস্থান করছে। ইচ্ছে করলেই কোনো অপশক্তি এটাকে উপড়ে ফেলতে পারবে না।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণের বিশ্বাস ও বোধের আলোকে আমাদের সংস্কৃতিকে মেলে ধরতে হবে। নতুন বিজয় পরবর্তী এ সময়ে আমাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির ধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এদেশের কালচারাল অঙ্গনকে এমনভাবে সুসজ্জিত করতে হবে, যেন ছাত্র জনতার এই বিজয়কে দীর্ঘস্থায়ী করে মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখা যায়। সামগ্রিকভাবে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয় বরং মানুষে চিন্তা চেতনাকে পরিশুদ্ধ করতে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মানুষের শিক্ষা দীক্ষা, আচার আচরণ, নৈতিকতা বোধের আলোকে বাংলাদেশ আগামীতে আরও মজবুতি অর্জন করবে সে প্রত্যাশা আমরা করি।

সভাপতির বক্তব্যে কবি মোশাররফ হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের সকল কবি লেখক ও শিল্পীদের সাথে থেকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রাখবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়ে আমাদের দায়িত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের সাথে সাথে মানবিক মূল্যবোধের আলোকে সাংস্কৃতিকভাবেও পূর্ণ বিজয় আমাদেরকে অর্জন করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে সতর্কতা
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির নামে চাঁদাবাজি করলে পুলিশ বা সেনার হাতে তুলে দিন : ফখরুল