নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা প্রতিবেশী মিয়ানমারসহ দেশের চারপাশে এবং ভারতের সেভেন সিস্টার্সে (সাত রাজ্য) ছড়িয়ে পড়তে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনিডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
কারা বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে এর পরিণতি কতটা গুরুতর হতে পারে এনডিটিভির এমন প্রশ্নে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটা খুব একটা সুখকর পরিস্থিতি হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি অস্থিতিশীল থাকে, তা মিয়ানমার এবং সেভেন সিস্টার্সে ছড়িয়ে পড়বে। এদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে, ফলে এটি বাংলাদেশের চারপাশে এবং মিয়ানমারে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এখন বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং যদি তা অর্জন করা না যায়, তাহলে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়বে। এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, দেশে ১৭ কোটি মানুষ আছে, যাদের অধিকাংশই তরুণ, যারা কখনো ভোট দেয়নি। আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা সুখী, আইন মান্যকারী নাগরিক এবং তারা জানে একটি গণতন্ত্র আছে। এই তরুণরা তাদের জীবনে কখনো ভোট দেয়নি। তারা কখনোই ভোট কেন্দ্রে যায়নি, কারণ নির্বাচন কখনোই হয়নি। আমাদের তরুণদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আপনি কি মনে করেন, এই সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আবারও সিস্টেমেটিক হামলার শিকার হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে কী হবে আমি জানি না। কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশে তাদের কণ্ঠস্বর থাকবে, তাদের কথা আমলে নেওয়া হবে। ভারতে যেমনটা নেওয়া হয়–সংখ্যালঘুরা ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৬ আগস্ট রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে দেশের পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।