শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতির প্রকাশ তিন দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন কর্মসূচি পালন করেছেন দৃশ্যশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, পারফরম্যান্সশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি–লেখক–গবেষক–স্থপতি ও শিল্পসংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজারো মানুষ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শিল্পীসমাজের ব্যানারে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডি আবাহনী মাঠের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি শেষে তারা একটি মিছিল বের করে। একই স্থান থেকে শুরু করে মিছিলটি শংকরে গিয়ে শেষ হয়। খবর বাংলানিউজের।
সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে শিল্পী সমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় অবিচার, অনাচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কর্তব্য বলে উল্লেখ করা হয়। সমাবেশ শেষে প্রতিবাদী গান ও স্লোগান সহকারে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পীরা অংশ নেন দেয়াল–লিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচিতে। তাদের কর্মসূচির মধ্যে ছিল ছাত্র হত্যা ও নিপীড়ন প্রতিরোধের সকল আন্দলোনের সঙ্গে সংহতির প্রকাশ, প্রত্যেক শহীদের নাম উচ্চারণ ও শিল্পীদের একত্রে ‘উপস্থিত’ বলা, ৮ থেকে ৯ টি গান–কবিতা–একক পারফরমেন্স, সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা ও সমাপনী বক্তৃতা। সংগীতশিল্পী অরূপ রাহীর পরিচালনায় ও শিল্পী–লেখক মোস্তফা জামানের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে সমাবেশে শিল্পীদের মধ্যে অংশ নেন– শিল্পী মোস্তফা জামান, ইমতিয়াজ আলম বেগ, আলোকচিত্রী অরূপ রাহী, সংগীতশিল্পী বিথী ঘোষ, কিউরেটর ও লেখক শেহজাদ চৌধুরী, শিল্পী ও কবি শাওন চিশতি, চিত্রশিল্পী কাজি তাহসিন আগাজ অপূর্ব, শিল্পী রাইয়ান ইসলাম, আলোকচিত্রশিল্পী মেহবুবা মাহজাবীন হাসান, চিত্রশিল্পী নুজহাত তাবাসসুম আনন, শিল্পী সাজান, শিল্পী তানজিম ইনিয়াত, শিল্পী নাঈম উল হাসান, কিউরেটর ও আর্কাইভিস্ট রীশাম শাহাব তীর্থ, স্থপতি ও চিত্রশিল্পী অসিত রায়, শিল্পী সুবর্ণা মোর্শেদা, চিত্রশিল্পী তাপসী, শিল্পী আফসানা শারমিন ঝুম্পা প্রমুখ।
কর্মসূচির সভাপতি ও শিল্পী–লেখক মোস্তফা জামান বলেন, নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায় করতে গিয়ে শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষকে প্রাণ দিয়েছেন। তাদের আমরা শহীদ বলছি। তাদের হত্যার বিচার চাইতে গেলে অনেক শিক্ষার্থীদের পুলিশ অত্যাচার করে গ্রেপ্তার করছে। হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে আমরা শিল্পীসমাজ আজ এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছি। তিন দফা দাবি হল– আটককৃত শিক্ষার্থীদের দ্রুত তাদের মুক্তি দিতে হবে, কারফিউ তুলে নিয়ে জনগণের স্বস্তি ফিরিয়ে এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সরকারের গুণ্ডা বাহিনীর বিচার করতে হবে, কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের নামে সংগঠিত সকল হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত বাস্তবায়নের লক্ষে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এদিকে, একই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে সংগঠনটি। বেলা ১১ টার পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সাংস্কৃতিক সমাবেশের আয়োজন করে তারা। সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তারা কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে দেশে ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদ জানান। এই ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।