চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশব্যাপী স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপি–জামাত–শিবিরের পরিকল্পিত নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রত্যেক পাড়ায় মহল্লায় জনগণকে সাথে নিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে সতর্ক অবস্থানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সাথে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীদের উজ্জীবিত করে প্রতি ওয়ার্ডে তৃণমূলস্তরে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় কাজীর দেড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভাকে সফল করার জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া শোকের মাস ১ আগস্ট বাদ আসর আন্দরকিল্লা জুমা মসজিদে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে মাসব্যাপী জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি হিসেবে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।
আগস্ট মাসে থানা সমন্বয় কমিটির আহবায়কদের নেতৃত্বে প্রতিটি ওয়ার্ডে ও থানা পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে কর্মীসভা করারও সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল সোমবার নগরীর দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশব্যাপী স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপি–জামাত–শিবিরের পরিকল্পিতভাবে নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদের প্রত্যেক পাড়ায় মহল্লায় দেশপ্রেমী জনগণকে সাথে নিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীদের উজ্জীবিত করে প্রতি ওয়ার্ডে তৃণমূলস্তরে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, নাশকতা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে। একই সাথে বিএনপি–জামাত ও শিবিরের যেসকল দুষ্কৃতিকারী পাড়া মহল্লায় ঘাপটি মেরে আছে তাদেরকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি যারা তাদেরকে আশ্রয়–প্রশ্রয় ও নাশকতায় উস্কানি দিচ্ছে তাদেরও একটি তালিকা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পেশ করতে হবে। নাশকতা ও অরাজকতার শিকার যেসকল পরিবার ও নিরীহ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত ও নাজেহাল হয়েছেন এবং সম্পদহানি ও জান–মালের ক্ষতি হয়েছে তাদের সাথে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সরাসরি যোগাযোগ করবেন। তিনি আরো স্মরণ করিয়ে দেন, নাশকতা–নৈরাজ্যে সরকারি স্থাপনার উপর হামলাকারী ও হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণকারী যেসকল চিহ্নিতকারী সন্ত্রাসী ও দুস্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তাদের দায় মুক্তির জন্য আওয়ামী লীগের কোনো নেতা–কর্মী যাতে সুপারিশ বা তদবির না করেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান। দলীয় কোনো স্তরের নেতাকর্মী যদি এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কার্যকলাপের সাথে যুক্ত হন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক যে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন তার আলোকে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তাগিদ দিয়ে বলেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ছিনতাই করে বিএনপি–জামাত ও শিবির সরকার উৎখাতের যে জঘন্য যে ধ্বংসাত্মক মরণ কামড় দিয়েছে তার বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে এক মুহুর্তও অপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আমাদেরকে এখন থেকেই চিহ্নিত রাষ্ট্র ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে কোনো রকম ন্যূনতম ছাড় না দিয়ে সমূলে উৎখাত করার পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিয়ে তা যাতে শতভাগ বাস্তবায়ন হয় সেই লক্ষ্যে নেতা–কর্মীদের সার্বক্ষণিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মহানগর আওয়ামী লীগ অতীতে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত–বিএনপি–শিবিরের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় সাংগঠনিক শক্তির ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে। এই অভিজ্ঞতায় শাণিত হয়ে সকল স্তরের নেতাকর্মীকে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত–বিএনপির ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের এলাকায় এলাকায় সতর্ক থাকতে হবে।
সভার শুরুতে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি–জামাত শিবিরের নাশকতা ও নৈরাজ্যে যারা নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম জহুরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মসিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক মিয়া, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবু তাহের, মো. হোসেন, শহীদুল আলম, জহর লাল হাজারী, নির্বাহী সদস্য এম এ লতিফ এমপি, নুরুল আবছার মিয়া, আবুল মনছুর, কামরুল হাসান বুলু, গাজী শফিউল আজিম, পেয়ার মোহাম্মদ, সৈয়দ আমিনুল হক, দোস্ত মোহাম্মদ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, আব্দুল লতিফ টিপু, বখতেয়ার উদ্দীন খান, মহব্বত আলী খান, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, ড. নিছার উদ্দীন মঞ্জু, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, মো. জাবেদ, বেলাল আহমদ, মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী প্রমুখ।