প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ভারতের কাছে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার বিকালে শেরেবাংলা নগরের চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন সভাপতিকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন ফখরুল। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের সঙ্গে রেল করিডোরসহ বিভিন্ন সমঝোতা সম্পর্কে সরকার জনগণের কাছে মিথ্যাচার করেছে। তারা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের কাছে কখনও সত্য কথা বলে নাই। সব সময় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে তারা বোকা বানানোর চেষ্টা করেছে। এই সমঝোতাগুলোর অর্থই হচ্ছে যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে নির্ভরশীল করে ফেলবে ভারতের কাছে। এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত তার দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যোগাযোগ করলে সেটি বাংলাদেশের কোনো কাজে আসবে না বলেও দাবি করেন ফখরুল। বলেন, অন্যান্য বিষয়গুলো আকাশ–স্থল–নৌপথ সবখানে তারা (সরকার) আজকে তাদেরকে (ভারত) পার্টনারশিপে দিয়ে দিয়েছে। পার্টনারশিপে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কানেক্টিভিটিতে আমাদের আপত্তি নেই। বাংলাদেশ কি পেল সেটাই হচ্ছে প্রধান। আমরা তো এখানে কিচ্ছু পাইনি। বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদী বিশেষ করে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি না হওয়ার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি নেতা। বলেন, আমাদের সীমান্তে হত্যা বন্ধ হচ্ছে না, আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি আছে তার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা সমঝোতা চুক্তি নিয়ে যেসব কথা বলছি, সেটা সত্য কথা বলছি। আমরা কোনো ষড়যন্ত্রের কথা বলছি না। আমরা বলছি, এই অবৈধ সরকার, তারাই আজকে চক্রান্ত করছে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে ফেলার।
জঙ্গিবাদের নামে বিরোধীদের নির্যাতন : মির্জা ফখরুলকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে। এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, হোলি আর্টিজানের বিষয়টা আমরা কনডেম করেছি, যে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা, আমরা আন্তর্জাতিক, জাতীয় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এই সরকার যেটা করেছে, তারা জঙ্গিবাদের নাম করে তাদের বিরোধী পক্ষকে হয়রানি করেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদেরকে কারাগারের নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন সভাপতি জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে আইনজীবীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল।