মানবজীবনে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকাটা বলতে গেলে চিরন্তন সত্য। তবু এ সংগ্রামের মাঝেই একটু সুখ খুঁজে বেড়ায় প্রত্যেকেই। হোক বিত্তশালী, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত। উচ্চবিত্তরা হয়তো অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল, কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে সুখে সুখী হয়েও অনেকের স্বস্তি মেলে না কোনও না কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে। কারো কারো আবার চাওয়া পাওয়ার ব্যাপকতা একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের অভাব অসীম। তার অন্যতম একটি কারণ, ধনাঢ্যদের মধ্যে একটা নেহাত প্রতিযোগিতা চলে কে বেশি সম্পদশালী। যার ফলে তাদের মানসিক সুখ পালিয়ে বেড়ায়। এদিকে মধ্যবিত্তদের মাঝেও যে এমনটা হয় না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মধ্যবিত্তরা স্বাভাবিক জীবন যাপন আর সামাজিকতা রক্ষার জন্য প্রায়শ অস্বস্তিতে ভোগে। একদিকে সংসারের মৌলিক চাহিদা, অন্যদিকে আত্মসম্মানবোধ এ দুটো রক্ষার জন্য বাহ্যিক কর্ম ও নিজের সামাজিক অবস্থান চিন্তিত হয়ে পড়ে প্রায়শই। আর এদিকে নিম্নবিত্তদের দুবেলা দুমুটো অন্ন আর লজ্জা ঢাকার সম্বল কাপড় যোগাড়ে হিমশিম খেতে হয়। তার উপর যদি চিকিৎসা খরচও সামলাতে হয়, তাহলেতো আর কথাই নেই। রাতের ঘুম নিশ্চিত হারাম। এই কষ্টের সাগরে ভাসতে ভাসতেও তারা কিন্তু সম্মানের কথা ভাবে। তারাও চায় সকলের কাছে সম্মানিত হয়ে বেঁচে থাকতে, যাতে কারো শরণাপন্ন হতে না হয়। বৈচিত্রময় সমস্যার বেড়াজালে আবদ্ধ নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত। তাই বলে কি নিজেকে অসুখী ভেবে ভেবে বিষণ্নতাকে সঙ্গী করবেন? নাহ! এমনটা ভাবা মোটেও ইতিবাচক নয়। আপনি ভেবে দেখেন প্রত্যেকের জীবন কোনও না কোনও সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আপনি চলমান একটি মানবজাতির প্রত্যক্ষ সদস্য। যেখানে রীতিমতো আপনি কোনও না কোনও ক্ষেত্রে সুখের ছোঁয়া পাচ্ছেন। আর সে পাওয়া সুখটাকেই গুরুত্ব দিয়ে স্রষ্টার নিকট কৃতজ্ঞতা জানান। দেখবেন আপনি অনেক সুখী। তখন কষ্ট নামের অধ্যায়টি অনেকাংশে ম্লান হয়ে যাবে। এভাবেও বেঁচে থাকা যায় এ সুন্দর পৃথিবীতে। কারণ, জীবনটা আপনার এবং বাকিটা আপনার পরিবারের।