বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে পাকিস্তানের হারের সংখ্যাটা আরো বাড়ল। গতরাতে বিশ্বকাপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তান। সে ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬ রানে হারিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখল ভারত। আর এই জয়ের ফলে সুপার এইট পর্বে এক পা দিয়েই রাখল তারা। ভারত তাদের টানা দুই ম্যাচে জিতেছে আর পাকিস্তান হেরেছে টানা দুই ম্যাচে। নিউইয়র্কের উইকেট এই ম্যাচে বোলারদের জন্য ছিল অনুকূলে। বোলারদের দাপটের সে ম্যাচে জয়টা ভারতেরই।
বৃষ্টির কারণে এক ঘন্টারও বেশি সময় পর শুরু হওয়া ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং এর আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তান অধিনায়ক। নিউইয়র্কের নাসাউ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারত এক ওভার ব্যাট করার পর আবার বৃষ্টির হানা। তবে সেটা বেশিক্ষণ সময় নেয়নি। ২৫ মিনিট অপেক্ষার পর পুনরায় শুরু হয় খেলা। বৃষ্টির পরেই প্রথম ওভারেই নাসিম শাহর আঘাত। একটি চার মেরে উসমান খানের ক্যাচে পরিনত হয়ে ফিরেন বিরাট কোহলি। পরের ওভারে রোহিত শর্মাকে ফেরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। হারিস রউফের হাতে ক্যাচ দেন ১২ বলে ১৩ রান করা ভারতীয় অধিনায়ক। ১৯ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটি গড়েন রিশভ পান্ত। আবার আক্রমণে এসে নাসিম শাহ ফেরান অক্ষর প্যাটেলকে। ১৮ বলে ২০ রান করা প্যাটেলের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন নাসিম। সুরিয়া কুমার যাদবকে নিয়ে আরো ৩১ রানের জুটি গড়েন রিশভ পান্ত। হারিস রউফের বলে মোহাম্মদ আমিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৮ বলে ৭ রান করা যাদব। এরপর শুরু হয় ভারতীয় ব্যাটারদের আসা যাওয়া। শিভম দুবেকে যে বলে ফিরতি ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন নাসিম শাহ তা ছিল অনন্য। তখনো ভারতের আশা জিইয়ে ছিল বড় স্কোর গড়ার। কারণ তখনো উইকেটে ছিলেন রিশভ পান্ত। কিন্তু মোহাম্মদ আমির আক্রমণে এসে ভারতের সে সম্ভাবনাকে শেষ করে দিলেন পরপর দুই বলে রিশভ পান্ত এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরিয়ে দিয়ে। বাবর আজমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন পান্ত ফিরেন ৩১ বলে ৪২ রান করে। পরের বলে জাদেজার সহজ ক্যাচ নেন ইমাদ ওয়াসিম। তখনো অবশ্য পাকিস্তানের সামনে কাটা হয়ে ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৮ তম ওভারে আক্রমণে এসে পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন হারিস রউফ। ইফতেখারের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরেন হার্দিক। পরের বলে কাভারে ইমাদের হাতে সহজ ক্যাচ দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন হারিস রউফও। কিন্তু সেটা আর হলো না। শেষ পর্যন্ত এক ওভার বাকি থাকতে ১১৯ রানে অল আউট হয় ভারত। ৯৫ রানে ৫ উইকেট হারানো ভারত শেষ ৫টি উইকেট হারায় ২৪ রানে। পাকিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ এবং হারিস রউফ। দুজনেই খরচ করেন ২১ রান করে। ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ আমির। পাকিস্তানের চার পেসার নিয়েছেন ৯টি উইকেট।
১২০ রানের লক্ষ্য। শুরুটা বেশ সতর্কতার সাথে করেছিলেন বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু ২৬ রানে বিচ্ছিন্ন হলেন দুজন। স্লিপে সুরিয়া কুমার যাদবের ক্যাচে পরিণত করে বাবর আজমকে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ। পাকিস্তান অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ১৩ রান। দ্বিতীয় উইকেটে রিজওয়ান এবং উসমান খান মিলে ৩৩ বলে যোগ করেন ৩১ রান। ১৩ রান করা উসমান খানকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান অক্ষর প্যাটেল। একটি চার একটি ছক্কা মেরে দায়িত্ব শেষ করলেন ফখর জামান। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফখর ফিরেন ১৩ রান করে। শুরু থেকে একপ্রান্ত ধরে রাখা রিজওয়ান ফিরলেন বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে। ৪৪ বলে ৩১ রান করেন তিনি। পাকিস্তান চাপে পড়ে যায়। সে চাপ আরো বাড়ে যখন সাদাব আর ইফতেখার ফিরে আসেন। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৯ রান । প্রথম বলেই ফিরেন ইমাদ ওয়াসিম। ২৩ বলে ১৫ রান করে। শেষ পর্যন্ত ৬ রান দুরে থাকতে থামে পাকিস্তান ১১৩ রানে। ভারতের পক্ষে ১৪ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। ২টি নিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া।